ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নম্বর তুলতে ব্যর্থ হয়েও চলতি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ৪৩ শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সন্তান।
পোষ্য কোটায় উপাচার্যের বিশেষ বিবেচনায় প্রতি বছরই এমন ভর্তির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মানবিকের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. আহসান কবির।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ ও ২২ অক্টোবরে ভর্তি পরীক্ষা হয়। নিয়ম অনুযায়ী পাশ নম্বর ৪০ পাওয়ার পরই পোষ্য কোটা কার্যকর হওয়ার কথা। তবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারির মধ্যে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটায় ৪০-এর কম এবং ন্যূনতম ৩০ নম্বর প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদের অনলাইনে ভর্তির বিভাগ পছন্দক্রম করতে বলা হয়। এরপর ২ জানুয়ারি তাদের ভর্তির সাক্ষাত্কার অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকেই ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ৪৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়।
মানবিকে (‘এ’ ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আহসান কবির জানান, ‘এমনটি প্রতি বছরই হয়ে থাকে এবং ভর্তি পরীক্ষার মূল কমিটিতে উপাচার্য স্যারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই হয়। আসনসংখ্যার ৫ শতাংশ পোষ্য কোটায় পূরণ করা হয়। এবারে ফল প্রকাশের পর দেখা যায় ওই পরিমাণ আসনসংখ্যার বিপরীতে থাকা শিক্ষার্থীরা পাশ নম্বর তুলতে পারেনি। পরে আসন শূন্য থাকার পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখানে অনিয়মের কিছু হয়নি।’
তবে বিজ্ঞান (সি) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির প্রধান ড. মো. একরামুল হামিদ বলেন, ‘কোটার নামে উচ্চশিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানে ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা উচিত হয়নি। এটা দুঃখজনক।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আকতার বানু বলেন, ‘এটা চরম অন্যায়। এরকম হলে ভর্তি পরীক্ষার দরকার কী? তাদের এমনিতেই ভর্তি করা হোক। যারা এই ভর্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘পোষ্য কোটার আসন খালি দেখে তারা মনে করেছেন যে নম্বর আরেকটু শিথিল করা যায়। ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
একাধিকবার চেষ্টা করেও উপাচার্য ড. আব্দুস সোবহানকে পাওয়া যায়নি।