প্রধান শিক্ষককে সভাপতির কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন বোর্ড চেয়ারম্যান - দৈনিকশিক্ষা

প্রধান শিক্ষককে সভাপতির কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন বোর্ড চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর বরখাস্ত করা হয় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার নিমাইদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ চন্দ্র মহন্তকে।  চূড়ান্ত বরখাস্ত অনুমোদনের জন্য বর্তমানে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটিতে রয়েছে। কিন্তু  টাকার বিনিময়ে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করানোর অপতৎপরতা শুরুর অভিযোগ উঠেছে মহন্ত এবং রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ১১ মে রাজশাহী বোর্ডে অনুষ্ঠিত আপিল কমিটির সভায় স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে মাফ চাইতে বলা হয়েছে মহন্তকে। আর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মহন্তকে মাফ করে দিয়ে স্বপদে বহাল করতে। চেয়ারম্যানের নজিরবিহীন এমন নির্দেশে আপিল কমিটির অনেকেই অবাক হয়েছেন। তবে, বোর্ড চেয়ারম্যান অ্যধাপক আবুল কালাম আজাদ কর্তৃক প্রধান শিক্ষককে এ মাফ চাওয়ার নির্দেশের পেছনে টাকা লেনদেনের গন্ধ থাকার অভিযোগ তুলেছেন আপিল কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্য। লেনদেনের অভিযোগের তীর বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবাশীষ রঞ্জন রায়ের দিকেও। দৈনিক শিক্ষার কাছেও এমন অভিযোগ এসেছে।  

আপিল কমিটির একজন সদস্য দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, গত ১১মে রাজশাহী বোর্ডের আপিল ও অরবিট্রেশন কমিটির সভায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মেকলেছার রহমানের কাছে মাফ চাইতে বলা হয় বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে। একই সভায় ‘ক্ষমা গ্রহণ করে’ বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে পূর্ব পদে বহাল রাখতে সভাপতিকে বলেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।

নিমাইদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মেকলেছার রহমান দৈনিক শিক্ষাকে জানান, বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপ চন্দ্র মহন্তের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের জমা হিসেবে খরচের গরমিল, সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন, দুর্নীতি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। গত বছরের ১৬ আগস্ট ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ তদন্তে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ম্যনেজিং কমিটি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার নিজেই স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্কুলের সব শিক্ষকের সামনে স্বীকার করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দিলীপ কুমার মহন্তকে গত ১৩ অক্টোবর চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত অনুমোদনের জন্য রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। 

স্কুলটির একজন শিক্ষক জানান, বরখাস্ত অনুমোদনের আগে গত ১১ মে আপিল ও আরবিট্রেশন কমিটির সভায় প্রধান শিক্ষক দিলীপ মহন্তকে তলব করে রাজশাহী বোর্ড। কিন্তু টাকা লেনদেনের কারণে বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা ম্যানেজ হয়েছেন। আপিল কমিটির সভায় সভাপতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলেছেন বলে প্রধান শিক্ষক নিজেই এলাকায় চাউর করেছেন গত কয়েকদিন ধরে।   

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক অধ্যাপক দেবাশীষ রঞ্জন রায় সোমবার (২০ মে) টেলিফোনে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘আপিল ও অরবিট্রেশন কমিটিতে ২ জন আইনজীবী রয়েছেন। কমিটি বরখাস্ত অনুমোদন করে বোর্ড কমিটিকে জানাবে আপিল আরবিট্রেশন কমিটি। তিনি আরও বলেন, আপিল কমিটিতে ম্যানেজ হওয়ার মতো কোনো সদস্য নেই। বোর্ড চেয়ারম্যান নিজে এ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কমিটির সভায় উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে বরখাস্ত অনুমোদন করা হবে কি-না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ’

জানতে চাইলে রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ সোমবার (২০ মে) দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ‘বরখাস্তের প্রক্রিয়া সঠিক না থাকলে অনেকে অন্যায় করেও পার পেয়ে যান। যেহেতু চাকরি হারানোর বিষয়, তাই আপিল কমিটির সভায় মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করা হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ ঘুষ খেয়ে বা টাকা লেনদেন করে আপিল কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করা সম্ভব না।  আমি ওই কমিটির একজন সদস্য। কমিটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক রয়েছেন। কমিটির সব সদস্যের সম্মতিক্রমে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটির কেউ একজন ভেটো দিলে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়।’  

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036079883575439