চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর কালারপোল হাজী মো. ওমরা মিঞা চেীধুরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে স্কুল প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ জুলাই) সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন শত শত শিক্ষার্থী। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশ নেয় স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরীকে দূর্নীতিবাজ, লম্পট, দূষ্কৃতিকারী, যৌন নির্যাতনকারী, অর্থ আত্মসাৎকারী এবং শিক্ষক সমাজের কলঙ্কসহ নানা আখ্যা দিয়ে তাকে দ্রুত অপসারণের দবি জানান প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এসময় অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে দ্রুত অপসারণ করা না হলে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, বির্তকিত কোনো ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের চেয়ারে বসার অধিকার রাখেনা। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে করা হয়েছিলো কিন্তু স্কুল ম্যানেজিং কমিটি কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার মতো শিক্ষক থাকলে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হবে। এমন কর্মকাণ্ডের বিচার ও প্রধান শিক্ষককে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানান তাঁরা।
যদিও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরী তার বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে দুবার স্কুলটি রেকর্ড গড়ে ভালো রেজাল্ট করেছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সব সময় শিক্ষকেরা যেন ক্লাসে আসে সে ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু একটি পক্ষ মিথ্যা অজুহাতে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে আমাকে ঘায়েল করতে চাইছে। গতকালও আমার স্কুলের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের ওপর অহেতুক হামলা চালানো হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি তাই কিছু বলতে পারছিনা।’
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, স্কুলের বর্তমান অবস্থা এবং কেন একটি পক্ষ শিক্ষার পরিবশে নষ্ট করছে তার সামগ্রিক বিষয় নিয়ে শিগগিরই একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন।’
এ বিষয়ে কালারপোল হাজী মো. ওমরা মিঞা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে জানান, সকালে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। গতকাল এমপিওভুক্ত ১৩ জন শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দেখা করে সার্বিক বিষয়ে জানিয়েছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবনা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এম মহিউদ্দীন চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, স্কুলে মানববন্ধন হয়েছে কিনা জানিনা। গতকাল স্কুলে একটু করে গিয়েছিলাম তখন শুনেছিলাম বিষয়টি। আমি খবর নিয়ে পরে জানাবো।
কর্ণফুলীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সর্তক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
মানবন্ধনে প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বর্তমান ছাত্র ও কেবিনেট সদস্যের মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম, তিশা গালিব, তুহিন, সেলিম হোসাইন, অভিভাবক ইদ্রিস মেম্বার, মাকসুদ মেম্বার, মো. ইউনুছ, জাফর আলম ও মো. তালেবসহ অনেকে।