প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের ড্রেস বাণিজ্যের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের ড্রেস বাণিজ্যের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি |

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিআর বিলকিসের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক পরিমাণ টাকা নিয়ে নতুন পোশাক বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। স্কুলড্রেস পরিবর্তনের অজুহাতে তিনি এ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) স্কুলড্রেস পরিবর্তন না করার জন্য ওই স্কুলের অভিভাবকরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকারের কাছে স্বারকলিপি দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র বিশ্বাসের কাছেও এর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এর আগেও এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তাতে কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

অভিভাবকরা জানান, উপজেলা পরিষদের সীমানা ঘেঁষে ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। একে দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অজুহাতে প্রধান শিক্ষক বিআর বিলকিস নিজের ইচ্ছামতো নিয়মে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের মতামতের কোনো দাম দেওয়া হয় না। নিজের মতামতের বিপক্ষে কেউ  কিছু বললেই তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন প্রধান শিক্ষক।

মাসুদুর রহমান নামের এক অভিভাবক বলেন, ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবার মতামতের বিরুদ্ধে এ স্কুলের ড্রেস পরিবর্তন করেছেন। এখানে প্রায় ১২শ’ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। বেশিরভাগই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বছরের শেষ দিকে অনেকের পক্ষেই আটশ’ বা এক হাজার টাকা দিয়ে নতুন ড্রেস কেনা সম্ভব না। তাই ড্রেস পরিবর্তনের কোনো দরকার নেই। শুধু তিনি বাণিজ্যের জন্যই সবার মতামতের বিরুদ্ধে এ কাজ করছেন।

অনু রানী দাস ও সুরাইয়া বেগম নামে দুই অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করেন। তিনি পড়াশোনার মান উন্নয়নের নামে বিভিন্ন টাকা আদায় করেন। কিন্তু, কারও কথার দাম দেন না। কিছু বললেই তিনি ধমক দিয়ে কথা বলেন।

আছমা নামে এক অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়ের ড্রেস পরিবর্তন করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। প্রধান শিক্ষক আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অন্য জায়গা থেকে ড্রেস বানিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করছেন। তাছাড়া, পুরনো ড্রেসটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতের ছোঁয়া আছে। মারগুবা ইয়াসমিন অধরা নামে এ স্কুলের সাবেক এক শিক্ষার্থী হাঁতের লেখা প্রতিযোগিতায় সারা বাংলাদেশে প্রথম হয়ে ওই ড্রেস পরে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। অধরাকে পিঠ চাপড়ে আদর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই ড্রেস নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি।

তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিআর বিলকিস। তিনি বলেন, ড্রেস বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে সভাপতি ড্রেস ফ্রি দিয়েছেন। ডিসেম্বর মাসে নোটিশের মাধ্যমে অভিভাবকদের জানিয়েই ড্রেস পরিবর্তন করেছি।

সোনারগাঁও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ড্রেস পরিবর্তনের সময় ডিসেম্বর মাসে। তবে, এ বিষয়টি স্কুলের শিক্ষকদের আওতায় থাকে। তারা বছরের প্রথমে ড্রেসের কাপড় ও রং বাছাই করে অভিভাবকদের ডেকে ড্রেস তৈরি করতে বলে দেবেন। স্কুলড্রেস বিক্রির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে, প্রধান শিক্ষক বলেছেন, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিছু শিক্ষার্থীকে ড্রেস ফ্রি দিয়েছেন। তবে, তিনি যদি ড্রেস বিক্রি করে থাকেন, তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। বছরের শেষ সময়ে ড্রেস পরিবর্তনের কোনো নিয়ম নেই। তাদের ডেকে ড্রেস বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070469379425049