প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল-আহাদের চিকিৎসা চলছে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । গত ১৫ এপ্রিল রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া এম.এল. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক এবং রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার তালুকদার দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, তদন্তে প্রধানশিক্ষক মো. ফজলুল হক আকনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী আহাদকে শারীরিক নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামীকাল রোববার (২১ এপ্রিল) প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দেয়া হবে।
নির্যাতনের শিকার আল-আহাদের বাবা রাজাপুর উপজেলার পাড়সাতুরিয়া গ্রামের মো. সোহেল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে সাতুরিয়া এম.এল. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র। এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে আমার ছেলে বিড়ালের কামড়ে গুরুতর হয়। এর কয়েকদিন পর তার ডায়রিয়া হয়। এ কারণে সে ১০/১২ দিন স্কুলে যেতে পারেনি। গত ১৫ এপ্রিল আমার ছেলে আহাদ স্কুলে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে কক্ষে ডেকে নিয়ে স্কুলে না আসার কারণ জিজ্ঞেস করেন। আমার ছেলে তখন ডাক্তার দেখানোর কাগজ দেখিয়ে বলে আমি আমি অসুস্থ ছিলাম। তাই স্কুলে আসতে পারিনি। তখন প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, আজ তোকে পিটিয়ে সুস্থ করবো। এই কথা বলেই প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকন বেত দিয়ে আহাদকে বেধড়ক পিটুনি দেয়। সহপাঠীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সোহেল মিয়া স্কুলে এসে ছেলেকে উদ্ধার করে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সোহেল মিয়া আরও অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলে বসে ছেলে মেয়েদের ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়ান। আমার ছেলেকেও তার কাছে পড়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তিনি পড়ান ৫০০ টাকায়। আমার ছেলে আহাদ অন্য একজনের কাছে ২০০ টাকায় প্রাইভেট পড়া শুরু করলে প্রধান শিক্ষক আমার ছেলের ওপর ক্ষিপ্ত হন। সে কারণেই আহাদকে মারা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক মো. ফজলুল হক আকন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, দশম শ্রেণির ছাত্র আল-আহাদ গত সাড়ে তিন মাসে মাত্র সাত-আটদিন স্কুলে এসেছে। অতিরিক্ত স্কুল বন্ধ দেয়ার কারণে আমি তাকে একটু শাসন করেছি। একটি মহল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। হাসপাতালে ভর্তির মত কোন ঘটনা ঘটেনি।