প্রবেশপত্রের দাবিতে ঢাকা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভীড় (ভিডিও) - দৈনিকশিক্ষা

প্রবেশপত্রের দাবিতে ঢাকা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভীড় (ভিডিও)

রুম্মান তূর্য |

প্রবেশপত্রের দাবিতে শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে অবস্থান নিয়েছেন। তারা রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বোর্ডের সব কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। বিকেল পাঁচটায় অফিস শেষ হলেও গাড়ী নিয়ে বের হতে পারেন নি কর্মকর্তারা। পরে পুলিশ ডাকা হয়। প্রবেশপত্র না পাওয়া কয়েকটি স্কুলের মধ্যে ঢাকা ধামরাইয়ের যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয় একটি। বোর্ড কর্মকর্তারা বলেছেন, অবৈধভাবে ফরম পূরণ করা ৩৭ জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র পাওয়ার দাবিতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে অবস্থান নেয়। আগামীকাল সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু।

জানা যায়, প্রবেশপত্র না পাওয়ায় রোববার দুপুর থেকে তারা ঢাকা বোর্ডে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিক্ষার্থীদের দাবি তারা বৈধ শিক্ষার্থী এবং টেস্টে পাস করেছেন। কিন্তু বোর্ড বলছে তারা অবৈধ। স্কুলের অনুমোদন নেই। সময়মতো ও নিয়ম অনুযায়ী ফরম পূরণ করেনি। শুধু শুধু প্রবেশপত্র নিতে এসেছে। পরিচয় গোপন রেখে অভিযুক্ত কয়েকটি স্কুলের শিক্ষককে এ সময়ে বোর্ডে ঘুরতে দেখা যায়। তারা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ঢাকা বোর্ডের  একজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীর সঙ্গে কয়েকটি স্কুলের প্রধানদের কথা হয়েছে ফরম পূরণ ও প্রবেশপত্র পাইয়ে দেয়ার। কিন্তু ওই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম প্রকাশ করতে চান না। 

বিকেল চারটার দিকে যাদবপুর স্কুলের ৩৭ সম্পর্কে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ার‌ম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাদেরকে কোনওভাবেই প্রবেশপত্র দেয়া যাবে না। এসব শিক্ষার্থীকে অন্য তিনটি স্কুল থেকে ধার করে এনে অবৈধভাবে ফরম পূরণ করানোর চেষ্টা করেছেন প্রধান শিক্ষক আলী হায়দার। এর জন্য দায়ী যাদবপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলী হায়দার। মতামত জানার চেষ্টা করেও আলী হায়দারকে পাওয়া যায়নি।  ‍আলী হায়দার পলাতক বলে জানা গেছে। তাকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ঢাকা বোর্ড। 

তবে, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে গেটে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিজ কক্ষে ডাকেন চেয়ারম্যান। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিবন্ধন কার্ড জমা নেন। দুই ঘন্টা অপেক্ষা করতে বলেন। কয়েকজন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পাশে পুলিশদের ঘুরতে দেখা যায়। 

বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুন: ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন 

এসএসসির প্রবেশপত্র না পেয়ে ঢাকা বোর্ডের মুল গেটে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: রুম্মান তূর্য

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, এই ৩৭ জন শিক্ষার্থী উত্তরণ প্রি ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুল, খোরশেদ নগর পাবলিক স্কুল ও সৈকত মডেল স্কুলের। এসব স্কুলই অবৈধ। যোগ্যতা না থাকলেও তাদেরকে এসএসসির ফরম পূরণের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। 

শিক্ষার্থীরা বোর্ডের গেটে অবস্থানকালে পুলিশের উপস্থিতি। ছবি: রুম্মান তূর্য

তবে, শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষার কাছে দাবি করেছেন তারা ফরম পূরণ করেছেন এবং টেস্টে পাস করেছেন। 

রোববার রাত সোয়া সাতটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের গেটে অবস্থান করছিল। এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখা যায়। 

খিলগাও মডেল স্কুল ও মাতুয়াইল স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকেও কান্না করতে দেখা যায়। 

 আগামীকাল ৩ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে।

এদিকে দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান শামীমসহ অনেকেই ভীড় জমিয়েছেন বোর্ডে। শামীম নিজেই অবৈধ। আবার শামীম বোর্ডে গিয়েছেন অবৈধ দাবি নিয়ে। 

জানা যায়, টেস্টে ফেল করা ও নকলের দায়ে বহিষ্কার হওয়া ২২ জন শিক্ষার্থীকে বিপুল টাকার বিনিময়ে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার চুক্তি হয়। এই চুক্তির অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ভীড় জমান দক্ষিণ বনশ্রী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান শামীম। অবৈধ দাবি নিয়ে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমীরুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করলে তিনি অধ্যক্ষকে বের হয়ে যেতে বলেন। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এর আগে গত বছরের মে মাসে বলাৎকারের অভিযোগে চার বছরের বেশি সময় ধরে বরখাস্ত থাকা দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহাল ও নিয়মিত বেতন ভাতা দেয়ার নির্দেশ দেয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এছাড়া কলেজটির সভাপতি আওয়ামী লীগের সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মো. সিদ্দিকুর রহমান শামীমকেও চাকরিতে পুনর্বহাল করার তদবির শুরু হয়েছে।

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063188076019287