বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেমিস্টার ফি ৬ মাসের জন্য মুক্তির দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। সোমবার (৪ মে) দৈনিক শিক্ষা ডটকম পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানান সংগঠনের নেতারা
সংগঠনটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অরূপ দাস শ্যাম বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের জন্যে সরকারের কাছে অর্থ বরাদ্দ চাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ইউজিসিকে। তারা যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন যে, তাদের একমাত্র উপার্জনের উৎস যে শিক্ষার্থীদের বেতন, তা নেয়া তারা বন্ধ রেখেছেন। একথার আংশিক সত্যতা থাকলেও পরিপূর্ণরূপে সত্য নয়। কেননা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার শুরুর সাথে সাথেই পুরো বেতন নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো একেকটি মুনাফাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চহারে বেতন নেয়া হয়। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার মুনাফা করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে আসছে। ফলে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক ইচ্ছা করলেই তহবিল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের সংকটকালে যথাসময়ে বেতন দিতে পারে। কিন্তু মালিকদের সেই দায়িত্বকে এড়িয়ে গিয়ে শিক্ষকদের বেতন দেয়ার জন্য সরকারের কাছে হাত পাতা বাস্তবে শিক্ষকদের মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ন করবে, একইসাথে মালিকের দায়হীন মুনাফা লাভের পথকে পাকাপোক্ত করবে। এইসকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে নিজেদের বিভিন্ন ব্যবসা সম্প্রসারন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকরা। মনে রাখা দরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোন দাতব্য প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের বড় বড় পুঁজিপতিরা মুনাফার লক্ষ্যে এই সকল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। ফলে কয়েকমাসের বেতন তারা তহবিল থেকে দিতে পারবেন না, একথা কোনভাবেই মানা যায় না। আর বিশ্ববিদ্যালয় এখন বন্ধ থাকার কারণে আনুষাঙ্গিক অনেক খরচই তাদের বহন করতে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা বড় সংখ্যায় মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা করে। অনেক ছাত্রই টিউশনি করে চলে। করোনা মহামারীর এই সংকটকালে শিক্ষার্থীদের পক্ষে টিউশন ফি’র বোঝা বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই আমরা দাবি করছি, এই দায়িত্ব প্রত্যেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেই নিতে হবে। যথাসময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের অন্তত আগামী ৬ মাসের সেমিস্টার ফি বা টিউশন ফি মওকুফ করতে হবে।