সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্কুলপর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থার মানের সংকট নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যেহেতু বিশ্বব্যাংক এসব মতামত দিয়েছে, তাই গণমাধ্যমসহ সর্বত্র গুরুত্বের সঙ্গে সেটি প্রচারিত হয়েছে। তবে আমরা যাঁরা দেশে শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরের খবর সব সময় রাখি, তাঁদের কাছে এসব তথ্য মোটেও নতুন কিছু নয়। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অনেক অভিযোগ, হতাশা ও কথাবার্তা হয়। কিন্তু আশানুরূপ পরিবর্তন খুব বেশি দেখা যায় না। না দেখার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করা আমাদের মতো দেশে মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। বিশেষত প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের মানসম্মত পঠন-পাঠনের নিশ্চয়তা বিধান করা কতটা কঠিন ও জটিল, সেটি নিয়ে যাঁরা ভাবেন, তাঁদেরও কল্পনার চেয়ে বাস্তবতা অনেক বেশি জটিল বললে মোটেও বাড়িয়ে বলা হবে না।
শুধু আমাদের দেশেই নয়, পৃথিবীর উন্নত, অনুন্নত ও পশ্চাৎপদ বলে পরিচিত দেশগুলোতে আজকের দিনে শিক্ষাকে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করা হয়। কেননা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পঠন-পাঠনে মান বজায় রাখা। যোগ্য শিক্ষকের ব্যবস্থা করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, পরিচালনা করা, পরিবীক্ষণ করা ও শিক্ষার্থীদের শতভাগকে অন্তত স্কুল শিক্ষা শেষ করে দেওয়া। একই সঙ্গে অপেক্ষাকৃত মেধাবীদের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া, তাদের শিক্ষা ও গবেষণার নিশ্চয়তা দেওয়া—এসবই প্রতিটি দেশকে নিজেদের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা দর্শনের বাস্তবতায় কার্যকর করতে হয়। প্রতিটি রাষ্ট্রকেই শিক্ষার চ্যালেঞ্জকে নিজ নিজ আর্থিক ও শিক্ষা পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংগঠিত করতে হয়। সুতরাং কাজটি আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় এই যুগে বিশ্বব্যাপী সমানভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশেও আমরা স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আসছি। শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তনও এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, শিক্ষক সংখ্যাও অনেক গুণ বেড়েছে। প্রশিক্ষণের বিষয়টিও নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষাদানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। দেশের মোট জনসংখ্যার বেশির ভাগ শিশুই এখন বিদ্যালয়মুখী হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি শিক্ষার্থী স্কুলে পড়ছে। কিন্তু সব শিক্ষার্থী মানসম্মত শিক্ষা নিয়ে ওপরের শ্রেণিতে উঠতে পারছে না, ঝরে পড়ছে। এসএসসি এবং এইচএসসি পর্যায়ে পরীক্ষার্থী হিসেবে আমরা যথাক্রমে ২২ লাখ ও ১৪ লাখের বেশি পাচ্ছি না। বাকিরা গেল কোথায়! যারা উত্তীর্ণ হচ্ছে, তারাই বা কেন উচ্চশিক্ষা নিতে পারছে না। এসব নিয়েই কিছু কথা।
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৪ হাজারের মতো, বেসরকারি কেজি স্কুল এবং ব্যক্তি মালিকানা স্কুল, মাদরাসা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কত তার সঠিক তথ্য কারো জানা নেই। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুব একটা পরিকল্পিতভাবে চলছে না। একই রকম পাঠ্য বই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যকর নেই। বেশির ভাগ কেজি স্কুলেই প্রথম শ্রেণির আগেই তিন-চার বছর সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনহীন বই বিভিন্ন শ্রেণিতে কার্যকর রয়েছে। এটি এখন প্রায় গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুদের শিক্ষায় নেই কোনো সামঞ্জ্যসপূর্ণ কারিকুলাম, বই-পুস্তক পঠন-পাঠনের নিয়মশৃঙ্খলা; একই সঙ্গে নেই শিক্ষক নিয়োগ ও দায়দায়িত্ব পালনের বিধি-বিধান। এ এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। দেশের বেশির ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী আছে; কিন্তু মানসম্মত শিক্ষা নেই।
আবার কেজি স্কুলে শিক্ষার্থী আছে, অপ্রয়োজনীয় বই-পুস্তকের ভারে শিক্ষার্থীরা নুয়ে পড়ছে। এ ছাড়া রয়েছে নানা ধরনের মাদরাসা, ইংরেজি, আরবিসহ বিদেশি মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরিবীক্ষণ করার জন্য রয়েছে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা প্রশাসন। কিন্তু তারাও পরিবীক্ষণের পরিবর্তে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মে শিক্ষাব্যবস্থাকে গতিহীন করে ফেলেছে। শিক্ষকদের বেশির ভাগই শিশুদের প্রয়োজনীয় পাঠদান, লিখন ও শিখনের দক্ষতা দানের প্রশিক্ষণ যোগ্যতা রাখেন না, সে রকম তদারকিতে থাকেন না। অভিভাবকদেরও বেশির ভাগই শিশুদের প্রাত্যহিক পঠন-পাঠনের দায়িত্ব বাড়িতে দেখভাল করে না। ফলে শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই শ্রেণিভিত্তিক মান বজায় রেখে পঠন-পাঠন করার অবস্থান খুব একটা পায় না। তারা শ্রেণি ডিঙিয়ে ওপরে উঠলেও সাধারণ বর্ণমালা পাঠ্যবই পড়া, শেখা, লেখা ইত্যাদি দক্ষতা অর্জন করছে না। যত ওপরের শ্রেণিতে ওঠে, তত তারা শিক্ষার ভার বইতে শুরু করে, তাদের মধ্যে জন্ম নিতে থাকে এক ধরনের ভয়ভীতি, নিরানন্দ জীবন।
একদিকে শিক্ষকদের বকুনি, বাড়িতে মা-বাবার তিরস্কার, সমাজে খারাপ শিক্ষার্থী হিসেবে অবজ্ঞা—এসব নিয়েই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ওপরের দিকে ওঠে। কিন্তু পঞ্চম শ্রেণিতে সমাপনী পরীক্ষা দিতে গিয়ে তাদের ওপর যে চাপটি পড়ে, সেটি বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ধারণ করতে পারে না। অন্যদিকে অভিভাবকরা সমাপনী পরীক্ষায় সন্তানের ফলাফলকে সামাজিক মর্যাদার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করে। স্কুলের শিক্ষকদের বেশির ভাগই প্রাইভেট টিউশন এবং গাইড বইয়ের চাপে তাদের এক বছর যা দেওয়ার চেষ্টা করে, তা মোটেও হজম করা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হয় না। সমাপনী পরীক্ষায় এখন কী হয়, সেটি সবাই জানে। উত্তরপত্রগুলো কিভাবে মূল্যায়িত, সেটিও সবার জানা। কিন্তু পরীক্ষার ফল অবিশ্বাস্য রকম ভালো দেখানোর মধ্য দিয়ে যে ফাঁকিবাজিটি তাদের জীবনে ঘটে, সেটি তাদের জন্য পরবর্তী শিক্ষাজীবনে সুখকর হয় না।
অষ্টম শ্রেণিতে গিয়েও অনেক শিক্ষার্থী একই রকম শিক্ষা ঘাটতি নিয়ে জেএসসি পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা নিয়ে রমরমা ব্যবসা চলে। শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানোর নামে টাকা পান। গাইড বইয়ের প্রকাশকরা নিশ্চিত পরীক্ষায় পাসের অঙ্গীকার নিয়ে আসে। এই শিক্ষার্থীরাই ঝরতে ঝরতে এসএসসিতে এসে ২০-২২ লাখে নেমে আসে। মানসম্মত শিক্ষালাভের চেয়ে তাদের তখন একটি এসএসসির জিপিএ সনদ লাভের প্রস্তুতি নিতে হয়। সেটি তারা পায়। অথচ গোটা ১০ বছর তারা যে শিক্ষাজীবন অতিক্রম করে আসে, তাতে তাদের প্রয়োজনীয় ভাষাজ্ঞান, অঙ্ক, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান, ভ্রমণ ইত্যাদি বিষয়ক বই-পুস্তক পড়ার সুযোগ প্রায় থাকেই না। এ ধরনের এক যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। পাবলিক পরীক্ষা শেষে তারা যে জিপিএটি পায়, তা তাদের জ্ঞান ও চিন্তার দক্ষতায় খুব সামান্যই অবদান রাখতে সহায়ক হয়। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী হতে পারে। সেটি নিয়ে আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে।
যেটি প্রথমেই দরকার তা হলো একটি অভিন্ন কারিকুলামে শিশুদের নিয়ে আসা। প্রথম শ্রেণির আগে শিশুদের এক বছরের বর্ণমালা পরিচিতি, লেখালেখি, চিত্রাঙ্কন, নাচ, গান ইত্যাদির বাইরে কিছুতেই অতিরিক্ত বই, ব্যাগ ইত্যাদিতে আটকে রাখা ঠিক হবে না। প্রতিটি শিশু অক্ষর জ্ঞান যেন শিশু শ্রেণিতেই অর্জন করতে পারে—সেই নিশ্চয়তা বিধান করতেই হবে। আমাদের বিরাট সংখ্যক শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই দক্ষতাটি কেন পাচ্ছে না, সেটি যাচাই করা উচিত। প্রথম শ্রেণিতে পড়তে গিয়ে তারা যদি পাঠ্যপুস্তকের বিষয়াদি পড়তে পারে, বুঝতে পারে এবং লেখালেখি করতে পারে, তাহলে তাদের তো পিছিয়ে পড়ার কোনো কারণই থাকার কথা নয়। একবার কোনো শিশু অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়লে তাকে যদি তখনই প্রস্তুত করা না হয় তাহলে তো সে পিছিয়ে পড়বেই। পিছিয়ে পড়া শিশু অন্যদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে না। তিরস্কারের স্বীকার হয়, সাথি বঞ্চিত হয়। যে শিশু এত সব বঞ্চনার শিকার হয় সে তো শিক্ষাবিমুখ শুরুতেই হতে বাধ্য। কিন্তু তার এই পিছিয়ে পড়া দেখভাল করতেই তো শিক্ষক আছেন। দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হচ্ছে, এই শিশুদের ওপরের দিকে তুলে আনার চেষ্টা হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের দায়িত্বহীনতা চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকে।
এখানে কোথাও শিক্ষকরা শিশুদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেন না, আবার কোথাও অভিভাবকরা শিশুদের প্রতি বেশি অমনোযোগী। এই দুই মিলিয়েই শিশুদের পিছিয়ে পড়া। শেষ পর্যন্ত পড়ার যাত্রা শুরু হওয়া। সেই যাত্রায় ক্রমেই বেশি বেশি শিক্ষার্থী যুক্ত হতে থাকে। অনেক স্কুলেই শিক্ষকরা কম সময় দেন, শ্রেণি পাঠটি কীভাবে শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে হয়, তার অনেক কিছুই জানেন না। এ ধরনের শিক্ষকের সংখ্যা মোটেও কম নয়।
সরকারের উচিত হবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মানহীন বা কম ডিগ্রিধারী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা থেকে সরে আসা। উন্নত দুনিয়ায় প্রাথমিক স্তরে যাঁরা পাঠদানে যুক্ত হন, তাঁদের প্রথমত উচ্চতর শিক্ষার যোগ্যতা থাকতে হয়। একই সঙ্গে শিক্ষাবিষয়ক ডিগ্রি অবশ্যই থাকতে হয়। তাহলেই শুধু তারা শিক্ষকতা পেশায় নিয়োগপত্র পান। আমাদের এখানে এসএসসি বা এইচএসসি পাস অনেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন। অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, আমাদের এই দুটো ডিগ্রির মান মোটেও সুখকর নয়। অনেকেরই ভাষা দক্ষতা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ক জ্ঞানদক্ষতা খুবই সীমিত। ভুলে ভরা তাঁদের লেখালেখি। সুতরাং তাঁদের হাতে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা মানসম্মত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই শিক্ষকদের বেশির ভাগই কোনো বই-পুস্তক পড়াশোনার সঙ্গে খুব একটা যুক্ত থাকেন না। দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে তাঁদের নিজেদেরই নেই কোনো কৌতূহল, পড়াশোনার অভ্যাস। ফলে তাঁদের হাতে আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন খুব আনন্দময় হয়ে ওঠার তেমন কোনো কারণ নেই।
সুতরাং সরকারের উচিত হবে কমপক্ষে স্নাতক ডিগ্রি এবং পাশাপাশি পিটিআই ডিগ্রিধারীদের শিক্ষক নিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা। অধিকতর ডিগ্রিধারীদের উচ্চতর বেতন স্কেল দেওয়া। এ ছাড়া যাঁরা সুনামের সঙ্গে স্কুলে পাঠদানে সময় দেবেন, কোনো ধরনের কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হবেন না, তাঁদের বিশেষ স্কেলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। শিক্ষা প্রশাসনকে অবশ্যই দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। শিক্ষকদের ওপর তাদের অহেতুক বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে মাধ্যমিক স্তরে বর্তমানে এনটিআরসির মাধ্যমে উচ্চতর ডিগ্রিধারী এবং প্রশিক্ষণ লাভকারী শিক্ষকদের নিয়োগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রেণিপাঠকে আকর্ষণীয় করতে হবে। সে জন্য যোগ্য, মেধাবী, দক্ষ ও নীতিনৈতিকতায় হৃদ্য শিক্ষকদের নিয়োগদান, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। শ্রেণি পাঠ, ভাষাজ্ঞান, বিষয়জ্ঞান ও প্রযুক্তির দক্ষতায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে ব্যস্ত রাখার আয়োজন সমৃদ্ধ আনন্দঘন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।
পাবলিক পরীক্ষার ওপর বর্তমানে যে ধরনের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তার আসলেই কোনো প্রয়োজন নেই, ফলাফলও নেই। সুতরাং উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যেন হয় আনন্দঘন, ভালো লাগা বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠার শিক্ষক, পাঠসামগ্রী, পঠন-পাঠন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ভরপুর। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন প্রয়োজনীয় জ্ঞানদক্ষতা নিয়েই পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়, কোনোভাবেই তার পিছিয়ে পড়া অবস্থানকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব এবং অভিভাবকদের দায়িত্ব যেন একাকার হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বড় কাজটি হবে মানসম্মত পাঠদানের শিক্ষক ও শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা। সেখানে কোনো ঘাটতি থাকতে দেওয়া চলবে না। তবেই দেশের তরুণদের মধ্য থেকে আমরা দক্ষ, অভিজ্ঞ, মেধাবী ও সৃজনশীল শিক্ষার্থী পাওয়ার আশা করতে পারব। উন্নত দেশগুলো তাই করছে, আমাদেরও শিক্ষার সেই পথেই হাঁটতে হবে।
লেখক : অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ