এবার প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ কিছুটা কমেছে। শতভাগ যোগ্যতাভিত্তিক (সৃজনশীল) প্রশ্নপদ্ধতি এবারই কার্যকর করা হয়েছে। সে কারণে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কিছুটা কমেছে বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকও দৈনিক শিক্ষাকে একই কথা বলেছেন।
রংপুর সদরের বদরপাুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, কয়েক বছর ধরেই ধাপে ধাপে যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন বাড়ানো হচ্ছিল। এ বছর সব প্রশ্নই যোগ্যতাভিত্তিক। এতে হয়তো শিশুদের অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগতে পারে। ফলের ওপরে এবার এর প্রভাব হয়তো পড়েছে।
মঙ্গলবার ফল প্রকাশের সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'আগে যে উপজেলায় পরীক্ষা হয়েছে, খাতাও সেই উপজেলায়ই দেখানো হতো। এবার এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলার শিক্ষকরা দেখেছেন। মূল্যায়ন পদ্ধতির এই পরিবর্তনের কারণে হয়তো কিছুটা পাস কমতে পারে।'
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মঞ্জুর কাদির সাংবাদিকদের বলেন, পাসের হার তো ক্রমান্বয়ে বাড়বে না। তাহলে তো ১০০ অতিক্রম করে যাবে। পাসের হার কখনও কমবে, কখনও বাড়বে। পরীক্ষার প্রশ্ন হয়তো এবার সেভাবেই হয়েছে, যার ফলে পাস কমেছে। এমসিকিউ তুলে দেওয়া হয়েছে, এর একটা প্রভাব থাকতে পারে। তবে পাসের হার ৯৫ এর নিচে নামেনি।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, 'সব বছর তো পাসের হার একই রকম থাকবে না। এবার আমরা সুন্দরভাবে পরীক্ষা নিয়েছি, দুর্নীতি করতে দেইনি, কিছুটা সুন্দর মূল্যায়ন হয়েছে হয়তোবা, এটাই হয়তো কারণ।'
পর্যায়ক্রমে এমসিকিউ তুলে দেওয়া হচ্ছিল, এবার শতভাগ সৃজনশীল করা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়ানো হয়নি, ফলাফলে সেটার প্রভাব পড়েছে কি-না; জানতে চাইলে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা তা মনে করি না। আমাদের কোনো কর্মকর্তা বা শিক্ষক এটা বলেনি যে, পরীক্ষার্থীরা সময় পাচ্ছে না।'
এবার দেশের কোনো কোনো উপজেলায় পাসের হার ৬০ শতাংশের মতো। একসঙ্গে ৪০ জন ঝরে যাওয়ার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন, জানতে চাওয়া হলে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, 'এ ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নেব, যাতে তারা আরও ভালো করতে পারে। তাদের মোটিভেট করব।'
গণশিক্ষা সচিব বলেন, 'শাস্তি আরোপের মাধ্যমে কিছু হবে না। আমরা চাচ্ছি মোটিভেশন করতে। শিক্ষকদের মোটিভেট করছি, মায়েদের মোটিভেট করছি, আমাদের প্রশাসনকে মোটিভেট করছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এটা অ্যাচিভ করা সম্ভব, শাস্তি আরোপের মাধ্যমে নয়।'