প্রাথমিকের কারিকুলাম নিয়ে মন্ত্রী ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের ভিন্নমত - দৈনিকশিক্ষা

প্রাথমিকের কারিকুলাম নিয়ে মন্ত্রী ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের ভিন্নমত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রদত্ত প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জেলা পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। মন্ত্রী ও শিক্ষকদের মতে, এনসিটিবি প্রদত্ত পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের জন্য যথার্থ ও যুগপযোগী।

অন্যদিকে অধিদপ্তরের জেলা পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা মনে করছেন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ইংরেজি ও গণিত বই শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করতে কঠিন হচ্ছে। ফলে তারা ঠিকমত শিখতে পারছে না।   
 
শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের অডিটোরিয়ামে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে 'যোগাযোগ ও সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ' বিষয়ক কর্মশালায় বক্তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে এ মতবিরোধ উঠে আসে।
 
সেমিনারের মুক্ত আলোচনা পর্বে, মানসম্মত শিক্ষা বলতে কি বোঝায়? মন্ত্রীর এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদপুর জেলার শিক্ষা অফিসার শুভব্রত দে তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলামে কিছু পরিবর্তন আনা উচিৎ। বিশেষত ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর ইংরেজি ও গণিত অনেক কঠিন। এটা এ বয়সী বাচ্চাদের জন্য প্রযোজ্য না।
 
প্রতিউত্তরে  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘বাচ্চার অক্ষর-জ্ঞান কোথায় শিখবে আর কখন রচনা লিখতে শিখবে তা পরিকল্পনা মাফিক হচ্ছে ও সে অনুসারে বই ছাপা হয়। আর এ ধরনের অভিযোগ আমার এ ৫ বছরের মন্ত্রীত্বে থাকা অবস্থায় আমি পাই নি। আর এ বিষয়ে গবেষণাও সব সময় চলছে।’
 
এদিকে শাহানা নামের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, পাঠ্যপুস্তকে যা আছে তা শিক্ষার্থীরা গ্রহণ করতে পারছে। আর তারা তা গ্রহণ করতে পারছে বলেই মানসম্মত শিক্ষা অর্জন সম্ভব হচ্ছে। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর ইংরেজি-গণিত অনেক ভালো ও সুন্দর। মূলত শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের একই বিষয়ে দুই ধরনের মতপ্রকাশ করতে দেখা গেছে।


 
আবার মানসম্মত শিক্ষা পুরোপুরি অর্জন হচ্ছে না এমন মন্তব্য করে অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের কোনো জায়গায় কোনো দুর্বলতা নেই। আমাদের কার্যক্রমে সব জায়গায় সফল আমরা। কিন্তু সবাই সামগ্রিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে না। মানসম্মত শিক্ষার জন্য অর্থের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন জ্ঞান। এ জন্য আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। নিজেদের বিবেকের কাছে নিজেরা দায়বদ্ধ ও অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকতে হবে।
 
শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রথমে আমাদের জানতে হবে নইলে আমরা জানাতে পারবো না। শিক্ষকরা যদি চায় তাহলে রাজনীতিবিদদের ছাড়াই দেশ সুন্দর করতে পারবে। বাচ্চাদের দায়িত্ব নিয়ে আপনাদের বুঝাতে হবে। শিশুদের শিশুদের মত করে শেখাতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে ভুল হলে জাতিগতভাবে বড় ভুল হবে। যা শোধরানো যায় না। তাই এ গুরুদায়িত্ব পালনে সর্বদা সচকিত থাকতে হবে।
 
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ জামান, অতিরিক্ত সচিব ড. এএএম মঞ্জুর কাদির, অধিদফতরের উপ-পরিচালক ইন্দবসু দেবসহ সারাদেশ থেকে আগত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা।
 
এসময় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তাদের মূল দাবিগুলো হলো- প্রতি বছরে এক মাস (জুন মাস) শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হওয়ার কারণে ওই সময়টাতে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট দেখা দেয়। পাঠদান কার্যক্রমে ব্যহত না করার উদ্দেশ্যে সারা বছর প্রর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ হওয়া জরুরি। আর প্রশিক্ষণে শিক্ষকরা কি শিখলো তার জবাবদিহীতা থাকতে হবে। প্রয়োজনে প্রমোশনের ন্যায় ডিমোশনের ব্যবস্থা থাকা উচিৎ বলে মনে করেন শিক্ষকরা।
 
বিসিএসে প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার পদ সংযোজন করতে হবে। পদমর্যাদা বৃদ্ধি করতে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কমপক্ষে ৫ম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে। মানহীন কিন্টারগার্ডেন অবিলম্বে বন্ধ করা উচিৎ। উপবৃত্তি সহ বিভিন্ন কাজে ডাটা এন্ট্রির কাজে দক্ষ লোক লাগবে। শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা সহ নিয়োগ বিধিকে ঢেলে সাজাতে হবে। স্কুলে খাদ্য নিরাপত্তা স্ব-স্ব স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
 
শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের এ সব অভিযোগের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের এসব দাবি যৌক্তিক। আমি অযৌক্তিক কিছু দেখছি না। কিন্তু কোনো প্রস্তাবনা এখন পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি। এগুলো উপস্থাপিত হলে পাস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে ব্যাপক নজর রাখেন বলেই ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন।
 

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068948268890381