রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে প্রেমিক রায়হান শেখের (২২) বাড়িতে প্রিয়া আক্তার নামে এক কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে রায়হান শেখ পলাতক রয়েছে।
প্রিয়া আক্তার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হাউলি কেউটিল গ্রামের সন্তোস মোল্লার মেয়ে ও গোয়ালন্দ দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
রায়হান শেখ একই গ্রামের বারেক শেখের ছেলে। রায়হান ঢাকায় দর্জির কাজ করে। আগামী শুক্রবার রায়হানের অন্যত্র বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
রায়হানের পরিবার এটিকে আত্মহত্যা বললেও প্রিয়ার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে।
রায়হানের ছোট ভাই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র রাহুল শেখ জানায়, সে ও তার বড় ভাই রায়হান প্রতিদিনের মতো সোমবার দিবাগত রাতে একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। মাঝ রাতে পাশের বাড়ির প্রিয়া জানালা দিয়ে তার ভাইকে ডাক দিলে সে দরজা খুলে বের হয়ে যায়। এ সময় তার বাবা-মা পাশের ঘরে ছিল।
রায়হানের মা জানান, ছেলের চিৎকার শুনে রাতে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন প্রিয়া বাড়ির উঠানের কাঁঠাল গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ঝুলছে এবং রায়হান নিচ থেকে পা ধরে রেখে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। তারা দ্রুত প্রিয়াকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে দেখে সে মারা গেছে।
প্রতিবেশী হালিমা বেগম জানান, এক বছরের উপরে রায়হান ও প্রিয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। দুই পরিবারের মধ্যে রায়হান ও প্রিয়ার বিয়ের ব্যাপারে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু রায়হানের বাবা ও চাচাদের অমতের কারণে বিয়ে ভেঙে যায়। এ অবস্থায় রায়হানের পরিবার অন্য মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে। আগামী শুক্রবার সেই বিয়ে হওয়ার কথা রয়েছে।
নিহত প্রিয়ার বড় বোন আলেয়া আক্তার বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার যে বোন আমাদের বোঝাতো আত্মহত্যা মহাপাপ, সেই বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। প্রিয়াকে ওরা খুন করেছে। আমরা প্রিয়া হত্যার বিচার চাই।’
প্রিয়ার বৃদ্ধ বাবা সন্তোষ মোল্লা বলেন, ‘আমার ছোট্ট মেয়েটাকে ওরা মেরে ফেলেছে, প্রিয়ার শরীরেও তার চিহ্ন আছে। ওকে ওরা না মেরে আমার কাছে দিয়ে যেতে পারত।’
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটি আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।