গাজীপুরের কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়াজিদুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে কাপাসিয়ার ইউএনওকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
জানা যায়, চলতি বছরে কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে নিয়মিত ৩৪৬ জন ছাত্রছাত্রী টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৩৮ জন উত্তীর্ণ হয়। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২০ জন, বাণিজ্য বিভাগে ৫৯ জন ও মানবিক বিভাগে ১৫৯ জন উত্তীর্ণ হয়। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি শেষ তারিখ নির্ধারণ করে তিনটি কমিটি যথাসময়ে টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের কাজ সমাপ্ত করে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উক্ত কমিটিকে পাশ কাটিয়ে গোপনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১১ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে টেস্ট পরীক্ষায় দুইয়ের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য এবং পরীক্ষায় অংশ নেয়নি এমন ২৩ জনকে ফরম পূরণের সুযোগ করে দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী একাধিক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সুযোগ দেয়ার কথা থাকলেও মানবিক বিভাগের সকল বিষয়ে অকৃতকার্য একজন, পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য একজন, চার বিষয়ে অকৃতকার্য চার জন, তিন বিষয়ে আট জন এবং দুই বিষয়ে অকৃতকার্য ৯ জন, টেস্ট পরীক্ষা না দিয়েও বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের ১ জন করে ফরম পূরণের সুযোগ পেয়েছে।
অপরদিকে টাকা না দিতে পারায় ফরম পূরণ করতে পারেনি অকৃতকার্য ৮৫ জন শিক্ষার্থী। গত ১৬ জানুয়ারি ফরম পূরণে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এসব অনিয়মের সংবাদ পেয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অফিস কক্ষে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তারা অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে চেয়ার টেনেহিঁচড়ে বাইরে ফেলে দেয় এবং বাগিবতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এ ঘটনার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত শুক্রবার কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলামের বাসায় জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে কলেজের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক আলী এরশাদ হোসেন আজাদকে দায়িত্ব দেয়া হয়।