ফরম পূরণে ভিকারুননিসার পৌনে তিন কোটি টাকার বাণিজ্য! - দৈনিকশিক্ষা

ফরম পূরণে ভিকারুননিসার পৌনে তিন কোটি টাকার বাণিজ্য!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের রাজধানীর ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ অতিরিক্ত আদায়ে করছে ২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা! ফরম পূরণে প্রতিষ্ঠানটিতে পরীক্ষার্থী প্রতি ফি নেয়া হচ্ছে ১৪ হাজার ৪০০ টাকা! সরকার ফরমপূরণে ১হাজার ৮৭০টাকা ফি নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেনা এ প্রতিষ্ঠানটি। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা গেছে।

অভিভাবকদের জিম্মি করে ছাত্রী প্রতি অতিরিক্ত সাড়ে ১২ হাজার টাকার বেশি আদায় করছে প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশ্লিষ্টরা। এবছর ২হাজার ২২৫জন ছাত্রী ভিকারুননিসা নুন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবে। সে হিসেবে এইচএসসির ফরমপূরণে অতিরিক্ত ২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা আদায় করছে প্রতিষ্ঠানটি। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, টিউশন ফি, মডেল টেস্ট ও ব্যবহারিকে ফি বাবাদ অতিরিক্ত ফি নেয়া হচ্ছে। ফরমপূরণে অতিরিক্ত ফি নেয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।

গত ১০ ডিসেম্বর ৬টি শাখার ছাত্রীদের টাকা জমা নেয়া হয়েছে। আর ১২ ডিসেম্বর আরও ৫টি শাখার ছাত্রীদের টাকা জমা নেয়া হবে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছে সূত্র। যদিও, আগামীকাল ১২ ডিসেম্বর থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বোর্ডে এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। এইচএসসির ফরমপূরণের ফি নিধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৭০টাকা।  

শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক, এইচএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পত্রপ্রতি ১০০ টাকা, ব্যবহারিকের ফি বাবদ পত্রপ্রতি ২৫ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৫০ টাকা, মূল সনদ বাবদ ১০০ টাকা, বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি বাবদ ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি বাবদ পরীক্ষার্থীপ্রতি ৫ টাকা নেয়া হবে। এছাড়া অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা অনিয়মিত ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্র ফি বাবদ প্রতি পরীক্ষার্থীকে ৪০০ টাকা ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ পরীক্ষার্থীদের পত্র প্রতি ২৫ টাকা দিতে হবে।  কিন্তু ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ এইচএসসির ফরম পূরণে নিচ্ছে ১৪ হাজার ৪০০টাকা।

এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ফরম পূরণে বোর্ড ফি বাবদ নেয়া হচ্ছে ১হাজার ৪৭০ টাকা। আর কেন্দ্র ফি হিসেবে নিচ্ছে ৪০০ টাকা। আর এইচএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে ১২ হাজার ৫৩০টাকা। 

প্রতিষ্ঠানের একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ থেকে জুন মাসের টিউশন ফি বাবদ ৮ হাজার ৪০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। আর বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি বাবদ ১ হাজার ৮৭০ টাকা নেয়া হচ্ছে। পিকনিকের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা। প্রিপারেশন টেস্ট বা মডেল টেস্টের ফি বাবদ নেয়া হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। সাথে বিজ্ঞান বিভাগের ব্যাবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ নেয়া হচ্ছে ৬৩০ টাকা। এ হিসেবে মোট ১৪ হাজার ৪০০ টাকা ফি নেয়া হচ্ছে এইচএসসির ফরম পূরণে।  তবে, ব্যবসায় শিক্ষা বা মানবিক বিভাগের এইচএসসির ফরম পূরণে ২০০ থেকে ১০০ টাকা কম লাগছে ছাত্রীদের।
অতিরিক্ত কোন ফি নেয়া হচ্ছেনা। প্রচলিতভাবে যে ফি নেয়া হয় তাই নেয়া হচ্ছে দাবি প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টদের। এবছর ২ হাজার ২২৫ জন ছাত্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবে। 

এদিকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত সাড়ে ১২ হাজার টাকা ফি নেয়ার ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। অভিভাবক মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ সুজন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি ছাত্রীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। যা কোনভাবে মেনে নেয়া যায়না। তবুও সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে এসব অবিচার সহ্য করতে হয়। প্রতিষ্ঠানটি মডেল টেস্ট বাবদ ২ হাজার ৫০০টাকা নিচ্ছে, অথচ ছাত্রীকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করে তোলা শিক্ষকদের দায়িত্ব। পিকনিকের নামে নেয়া হচ্ছে ১ হাজার টাকা। কেউ পিকনিকে না যেতে চাইলেও তাকে দিতে হচ্ছে এ টাকা। আর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত টিউশন ফি বাবদ প্রতি ছাত্রীর কাছ থেকে ৮ হাজারা ৪০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। কারণ মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত ছাত্রীরা ক্লাস করবেন না। এভাবে বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটি অভিভাবকদের জিম্মি করে কয়েকশত কোটি টাকার ফান্ড তৈরি করেছে। কিন্তু তা দেখার কেউ নেই।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065548419952393