ফের অনশন শুরুর ঘোষণা ননএমপিও শিক্ষকদের - দৈনিকশিক্ষা

ফের অনশন শুরুর ঘোষণা ননএমপিও শিক্ষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির সাথে শিক্ষক নেতাদের আলোচনায় দাবি পূরণের কোনও আশ্বাস মেলেনি। তাই সোমবার (২১ অক্টোবর) থেকে অনশন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচাী নেতারা। সব প্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তি চান শিক্ষক-কর্মচারীদের একাংশ। এ দাবিতে সোমবার (২১ অক্টোবর) থেকে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে আমরণ অনশন শুরু করবেন শিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রী সাথে ননএমপিও শিক্ষক নেতাদের আড়াইঘন্টার বৈঠকে কোনও দাবি মানার আশ্বাস না পাওয়ায় ফের অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে দশটার দিকে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভুষন এবং সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যদি এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শুধু যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সরকার। এ কথাই মন্ত্রী সাফ সাফ বলে দিয়েছেন। 

এদিকে, ননএমপিও শিক্ষকদের অপর অংশের নেতা মো: এশারত আলী এ আন্দোলনে নেই বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন।  

তবে, গণ অবস্থানরত শিক্ষকদের অনেকেই আমরন অনশনের পক্ষে নন বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন। বিশেষ করে যাদের প্রতিষ্ঠান যোগ্য বিবেচিত হয়েছে তারা কোনওভাবেই আমরন অনশন করতে চাননা।  এর আগে কয়েকদফা অনশন করেছেন তারা। তিনদিন পর অনশন ভাঙানোর জন্য লোক পাওয়া যায়না বলে কয়েকজন নেতা দৈনিক শিক্ষাকে জানান। 

বৈঠকের মূল আলোচনা: শিক্ষামন্ত্রীর অধিকাংশ প্রশ্নের যৌক্তিক জবাব দিতে পারেননি শিক্ষক নেতারা। রোববার রাত আটটার কিছু পর রাজধানীর সেগুন বাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বৈঠক শুরু হয়। শুরুতেই বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার। বৈঠকের শুরুতেই ডলার বলেন, ‘অযোগ্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আলোচনায় ডাকার জন্য মাননীয় মন্ত্রী আপনাকে ধন্যবাদ।’  

এরপর ডলার যুক্তি দেন যে, ‘সরকার যেহেতু আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো স্বীকৃতি দিয়েছে তাই সবগুলো একযোগে এমপিওভুক্ত করতে হবে।’  

এরপর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘স্বীকৃতি দেয়ার মানে এই নয় যে এমপিওভুক্ত করতে হবে। স্বীকৃতির সাথে এমপিওর কোনও সম্পর্ক নেই। স্বীকৃতি দেয়ার মানে হলো, পাঠদান করার যোগ্যতা থাকার স্বীকৃতি, এটা এক ধরনের ট্রেড লাইসেন্স, যে কোনও ব্যবসা বা দোকান খুলতে যেমন লাইসেন্স প্রয়োজন হয় তেমনিই একটা লাইসেন্স হলো একোডেমিক স্বীকৃতি।।’  

নিজেদের অযোগ্য শিক্ষক হিসেবে স্বীকার করা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পাঠদান অনুমতি আর স্বীকৃতি দেয়ার সময় তো মন্ত্রণালয় বলেনি এমপিও দেয়া হবে। বরং এমপিও না নেয়ার জন্য এবং কোনওদিন এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন না করার জন্যও লিখিত দিয়েছেন অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান ‘ 

নেতাদের কাছে মন্ত্রী জানতে চা্ন, ‘বছরের বেশিরভাগ সময় আপনারা তো রাস্তায়ই থাকেন।তাহলে পড়ান কখন?  এসব প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি নেতারা।   

নেতারা তাদের বক্তৃতায় যেসব প্রতিষ্ঠান যোগ্য হিসেবে দাবি করেছন, পাসের হার অমুক তমুক বলেছেন, সেসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে টু দি পয়েন্টে প্রশ্ন করেন মন্ত্রী। একটি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়েছে ১৭ জন পাস করেছে ১৫ জন। আপনারা দেখাচ্ছেন পাসের হার অনেক বেশি। কিন্তু বাস্তবে এমপিওর নীতিমালা অনুযায়ী কাম্যসংখ্যক পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থী সংখ্যার ধারেকাছেও নেই আপনাদের পরীক্ষার্থী সংখ্যা। এখন আপনার যদি পাসের হার দেখিয়ে এমপিও পেতে চান তা তো বাস্তবসম্মত হবে না। 

শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি শিক্ষক নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এখন থেকে প্রতিবছরই এমপিওভুক্ত করা হবে। এবার যে তালিকাটা করা হয়েছে।  এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন তা নীতিমালা অনুযায়ী করা হয়েছে। এটার এখন আর বদলানো যাচেছনা।’  

স্বীকৃতি পাওয়া ৫ হাজার ৪৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ১৮ অক্টোবর (শুক্রবার) থেকে আমরণ অনশন শুরু করার ঘোষণা দেয়া হলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথে ফোনালাপের পর তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন শিক্ষক নেতারা।

একযোগে ৫ হাজার ২৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ১৫ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। তবে, রোববার রাতে মন্ত্রীর সাথে বৈঠকে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছয় হাজারের বেশি দাবি করেছেন নেতারা। 

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বারোটার দিকে দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে প্রেসক্লাবের কাছেই কদম ফোয়ারার সামনে মিছিলের গতিরোধ করে পুলিশ। সেখান থেকে ফিরে এসে ফের প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন তারা। 

শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অধিকার আদায়ের দাবিতে এ গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। নতুন নীতিমালাটি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা হলেও আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান করিয়ে আসছি। ৫ হাজার ২৪২টি প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি পেলেও নীতিমালার কথা বলে আমাদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে। একাডেমিক স্বীকৃতিই এমপিও মানদণ্ড। আমরা সে হিসেবে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত হবে সে আশা করছি। তাঁরা আরও জানান, ‘আমরা শুরু থেকেই দাবি জানাচ্ছি স্বীকৃতপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার।   

শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘আমরা নীতিমালা মানিনা। নীতিমালা একটাই একাডেমিক স্বীকৃতি। নতুন এমপিও খুবই কঠোর। এ  নীতিমালা রাজনৈতিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়নি। শিক্ষক সমাজ বা সুধি সমাজ থেকেও তা পর্যালোচনা করা হয়নি। এ নীতিমালা আমরা মানি না।’ 

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037050247192383