করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে কারাগারের ভিড় কমাতে ভারতের মহারাষ্ট্রের কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়েছিল। সেই বন্দিদের একজন গত শনিবার এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে। এই খবরে বাংলাদেশেও করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত তিন সহস্রাধিক বন্দির বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। ফের এসব বন্দির ইতিহাস যাচাই করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ওমর ফারুক।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান বলেন, ‘কারাবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এখনো বন্দির তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েই রয়েছে। কাজ শেষ করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সপ্তাহ দুয়েক আগে কারা অধিদপ্তর থেকে তিন হাজারের বেশি বন্দির তালিকা দেয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
এরপর মন্ত্রণালয় ওই তালিকার মধ্যে কাকে কাকে মুক্তি দেয়া যায়, কেউ মুক্তি পাওয়ার অযোগ্য কি না, সেসব বিষয় যাচাই করা হচ্ছে। সাধারণ ছুটি চলমান থাকলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা রোববারও অফিসে গিয়ে জরুরি কাজ করেছেন। এর মধ্যে বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি নিয়েও কাজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরার হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
আবরার হোসেন বলেন, ‘আমরা তালিকা নিয়ে কাজ করছি। আজও (গতকাল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমরা বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। কাজ এগোচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনার কারণে বন্দিদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যারা অক্ষম, অচল ও সাজা খাটা প্রায় শেষের দিকে, তেমন তিন সহস্রাধিক ব্যক্তির বন্দির ইতিহাস যাচাইয়ের পর কারা কর্তৃপক্ষ তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
এর মধ্যেই ভারতের মহারাষ্ট্রে কারাগার থেকে বেরিয়ে এক বন্দি পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের বন্দিমুক্তির ক্ষেত্রে এ ঘটনার প্রভাব পড়ছে বলে জানা গেছে। এক কারা কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু করোনার সুবিধায় মুক্তি পাওয়ার পর ভারতে একটা ঘটনা ঘটেছে, এ কারণে বন্দিদের তালিকা ফের যাচাই করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে তাদের হিস্ট্রি, কারাগারে তাদের আচরণ কেমন ছিল ইত্যাদি। মুক্তি পেয়ে তারা অপরাধে জড়াতে পারে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।