ফেসবুক, ইউটিউবে ক্লাসের ভিডিও দিতে আপত্তি শিক্ষকদের - দৈনিকশিক্ষা

ফেসবুক, ইউটিউবে ক্লাসের ভিডিও দিতে আপত্তি শিক্ষকদের

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে চলমান ভার্চুয়াল ক্লাসের ভিডিও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশের সিদ্ধান্ত হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তা করছেন না। সোমবার (২০ জুলাই) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সাবিকুন্নাহার লিপি।

ফলে ভার্চুয়াল ক্লাসের জন্য উপযুক্ত ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে থাকা বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, যারা সুযোগমতো পরে ক্লাস দেখতে পারতেন, তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্লাসের ভিডিও প্রকাশ না করার বিষয়ে ক্লাসরুম প্রাইভেসি লঙ্ঘন, কারিগরি জটিলতা ও ক্লাসে উপস্থিতি কমে যাওয়ার শঙ্কার কথা বলছে বিভিন্ন বিভাগ।

গত ২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা যেন যে কোনো সময় দেখতে পারেন, সেজন্য অনলাইন ক্লাসের ভিডিও ফেইসবুক বা ইউটিউবে আপলোড করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

এর আগে উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার বিষয়ে বৈঠকে ক্লাসের রেকর্ড অনলাইন প্লাটফর্মে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

আরও পড়ুন : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে শিক্ষকেরা জড়সড় অনলাইন পাঠদানে

তবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন, প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান, ফিন্যান্স, উদ্ভিদবিজ্ঞান, আইন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ইংরেজি, বাংলা, নৃবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামিক স্টাডিজ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, আইইআর ও আইএমএল বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসের ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, “কিছু প্রাইভেসি ইস্যু আছে। মানে শিক্ষার্থীরা এই ভিডিও নিয়ে পাবলিকলি কোট করতে পারে, তা নিয়ে শিক্ষকদের আপত্তি আছে।

“ইস্যুগুলো ওভারকাম না হলে শিক্ষকরা আপলোড করতে বাধ্য না।”

ফেইসবুক বা ইউটিউবের বিকল্প অন্য কোনো মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভিডিও শেয়ার করার বিষয়ে মঙ্গলবার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে তিনি জানান।

একই সমস্যার কথা তুলে ধরে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “অনেক সময় ক্লাস নিতে গিয়ে হয়ত অনেক রকমের আনওয়ান্টেড কথা হয়ে যায়৷ এখন যদি আমি অনলাইনে একটা জিনিস দেই পাবলিকলি, সেটাতো একটু এডিট করার দরকার আছে।”

ভিডিও সম্পাদনায় কারিগরি দক্ষতার অভাবের কথা তুলে ধরে তা শিগগির অর্জন করে সম্পাদনার পর ভিডিও আপলোড করা হবে বলে জানান তিনি।

অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানও একই কথা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, ক্লাসের শুরুর দিকে অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা থাকে। সেগুলো সম্পাদনা না করে প্রকাশ করতে হবে।

তবে প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা মনে করেন, ভিডিও আপলোড করা হলে ভার্চুয়াল ক্লাসে উপস্থিতি কমবে।

তিনি বলেন, “অনলাইনে আপলোড করতে চাইছি না। শুরুর থেকে যদি দিতে শুরু করি তাহলে ওরা সময় মতো ক্লাসে উপস্থিত না থেকে ইচ্ছামতো দেখে নিবে; কিন্তু ক্লাসে থাকার ব্যাপার আছে না?”

লোকপ্রশাসন বিভাগের চেয়ারপার্সন আসমা বিনতে ইকবাল বলেন, “ভিডিও আপলোড এসব কিছু বুঝি না। ওরা কীভাবে সবকিছু পাবে তা পৌঁছে দিতে বিভাগ বদ্ধপরিকর। আমরা না পড়িয়ে তাদের পরীক্ষার হলে পাঠাব না।”

ক্লাসের ভিডিও অনলাইন প্লাটফর্মে না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।

প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, “নেট দুর্বল থাকায় (ভার্চুয়াল) ক্লাস ডিসকানেক্ট হয়ে যায়, কথা কেটে আসায় বুঝতেও পারি না। তাছাড়া অনেকে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে না।”

“ইন্টারনেটের খরচ বাড়ায় সামর্থ্য না থাকলেও আমার মতো অনেকে ক্লাসে বাধ্য হচ্ছেন। ভিডিও আপলোড করে রাখলে পরে সেটা আমরা দেখে নিতে পারতাম।”

অনলাইন ক্লাস নতুন অভিজ্ঞতা হওয়ায় সমস্যাগুলো হচ্ছে বলে মনে করেন উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান। তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম ছাত্ররা যাতে বঞ্চিত না হয়। অনেকে হয়ত সময়মতো ক্লাসটা দেখতে পারবে না, সে যাতে পরেও দেখতে পারে সেজন্য এটার রেকর্ড রাখার। নির্দেশনা নয়, এটা ছিল পরামর্শ।

“কিন্তু এখনো এটা সবাই পারছে না। সেজন্য আমরা দুইবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। দুইটা সেমিনার হয়েছে শিক্ষকদের নিয়ে৷ যেখানে যেখানে সমস্যা আছে শিক্ষকদের, কারণ ছাত্ররা যেমন সমস্যার মধ্যে পড়েছে অনেক শিক্ষকও টেকনিক্যাল অভিজ্ঞতা না থাকায়- এগুলা বিলম্বিত হচ্ছে। আশা করি আস্তে আস্তে সমস্যাগুলো কেটে যাবে।”

“রেকর্ড শিক্ষকরা না করলেও কিছু যায় আসে না৷ ছাত্ররা তাদের মতো রেকর্ড করে ফেলতে পারবে। কিছু রেকর্ড করার কথা কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করে না।”

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059289932250977