ফ্রিল্যান্স কোচিং নিয়ন্ত্রণে আনতে নীতিমালার দাবি - Dainikshiksha

ফ্রিল্যান্স কোচিং নিয়ন্ত্রণে আনতে নীতিমালার দাবি

নিজামুল হক |

স্কুল কলেজের শিক্ষক ছাড়া অন্যদের পরিচালিত (ফ্রিলান্স) কোচিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা প্রনয়ণের দাবি উঠেছে। ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে পরিচালিত এ কোচিং ব্যবস্থার একটি কাঠামোর ভেতর আনার দাবি সংশ্লিষ্ট সেক্টরের উদ্যোক্তাদেরও। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা ‘কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ২০১২’ সংশ্লিষ্ট একটি রিটের রায়ে আদালত বলেছে, স্কুলে কলেজের শিক্ষকরা কোচিং করাতে পারবেন না। তবে ফ্রিল্যান্সদের কোচিং চলতে বাধা নেই।’ এরপরই নতুন করে এ খাতের উদ্যোক্তারা নীতিমালা প্রণয়নের আহবান জানিয়েছেন।

ঢাকার একাধিক কোচিং প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ কোচিং মানহীন। পরিচালিত হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। কোর্স প্রতি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। নীতিমালা না থাকায় এর ওপর সরকারের নেই কোন নিয়ন্ত্রণও। ফলে তাদের ইচ্ছে মতোই সব কিছু চলছে। যারা এসব কোচিংয়ে শিক্ষক তাদের অধিকাংশ অখ্যাত কলেজের দুর্বল ছাত্র, যাদের নাম মাত্র বেতন দেয়া হয়। অন্যদিকে শিক্ষার্থী টানতে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন কোচিং কর্তৃপক্ষ। এ খাতে অর্থ ব্যয় করছে। কারো কারো বিরুদ্ধে রয়েছে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগও। নীতিমালা না থাকায় এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে যারা ভর্তির সুযোগ পায়, তাদের অধিকাংশই কোনো না কোনো কোচিং সেন্টারে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়। এমনকি বিসিএসে উত্তীর্ণদের শীর্ষে যারা রয়েছেন তারাও কোচিং সেন্টার থেকেই প্রস্তুতি নেন। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান একাডেমিক কোচিংও পরিচালনা করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছায়াশিক্ষা চালু আছে। এমনকি উন্নত দেশের শিক্ষার্থীরাও স্কুল-কলেজের পাশাপাশি কোচিং সেন্টার বা সহায়ক বইয়ের দারস্থ হয়। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণেই কোচিং ব্যবসা গড়ে উঠেছে। আমেনা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে। তবে এরা পুরোটই বাণিজ্যিক। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অলিগলির নিম্নমানের কোচিং বন্ধ করতে হবে। মান যাচাইয়ের জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা থাকতে হবে। রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, নীতিমালায় এনে এদের মনিটরিং করতে হবে। নীতিমালা না মানলে বন্ধ করে দিতে হবে। অ্যাসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমদাদুল হক শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন বিবেচনা করে অন্যান্য দেশের মতো কোচিং সেন্টারগুলোকে ছায়াশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।

উদ্ভাস কোচিংয়ের কর্নধার মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, আমরাও নীতিমালা চাই। যাতে নিম্নমানের কোচিংয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতারিত না হন। বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ক্লাস হয় ১৮০ দিন। আবার যেসব স্কুলে সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হয় তাদের ক্লাস আরো কম হয়। আর একটি ক্লাসে ১০০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী থাকে। ফলে শ্রেণি শিক্ষক এসে রোল কল করতেই সময় চলে যায়। আর অন্য শিক্ষকরা ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটের ক্লাসে এসে পড়া দিতেই সময় চলে যায়। বড়জোড় গণিত ক্লাসে একটি অংক করে বাকিগুলো বাড়িতে করতে বলা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা যা পড়া দেওয়া হলো তা বুঝতে পেরেছে কীনা তা দেখার সময় থাকে না। এ কারণে ক্লাসরুমের বাইরেও আলাদা কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে। ভারতেও ছায়া শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের জন্য পৃথক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

অভিভাবক, শিক্ষক ও উদ্যোক্তরা বলছেন, স্কুল- কলেজের কোচিংয়ের বিষয়ে সরকার ২০১২ সালে একটি নীতিমালা জারি করে। ওই নীতিমালায় নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে পড়ানোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অন্য প্রতিষ্ঠানের ১০ শিক্ষার্থীকে পড়ানোর সুযোগ আছে। এছাড়া সুযোগ আছে স্কুলের ভেতরেই দুর্বল শিক্ষকদের জন্য বাড়তি ক্লাস, যা থেকে বাড়তি আয়ের সুযোগ রয়েছে। এর আলোকে কোচিংকে ছায়া শিক্ষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের নীতিমালার আওতায় আনার দাবি উদ্যোক্তাদের।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010074138641357