বই মানুষের পরম মিত্র - দৈনিকশিক্ষা

বই মানুষের পরম মিত্র

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সভ্যতা বিকাশের ক্ষেত্রে জ্ঞানই হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম মাধ্যম। আর মানব সভ্যতার অর্জিত জ্ঞান কালান্তরে পৌঁছে যায় বইয়ের মাধ্যমে। বই মানুষকে আলোকিত করে এবং গোটা বিশ্বকে জানা যায় বইয়ের মাধ্যমে। শৈশবে বই হয় প্রথম বন্ধু। মানুষের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত্ চিন্তা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মননশীলতার বিকাশে সেতুবন্ধন রচনা করেছে বই। মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারের পর বই হয়ে উঠেছে মানুষের নিত্যসঙ্গী। একটি গ্রহণযোগ্য বিষয়কে ধারণ করে একটি বই চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে। জীবনকে সুন্দরভাবে গঠন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে বইয়ের ভূমিকা অপরিসীম। গ্রন্থলব্ধ জ্ঞান মানুষের চিন্তাচেতনাকে শক্তিশালী করে। কাজেই বই পড়া অপরিহার্য। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায়, জীবন ও বই পরস্পর নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ। মানব জীবনের বড়ো আকুতি হলো জ্ঞানচর্চা। বই পাঠের মূল উদ্দেশ্য জ্ঞানলাভ ও মানসিক উন্নতি। বই সত্য, সুন্দর ও আনন্দময় অনুভূতিতে পাঠকচিত্তকে ভরিয়ে তোলে। বই মানুষের পরম মিত্র। প্রতিদিনকার সহযাত্রী। বই কখনোই কারো সঙ্গে বৈরিতা করে না। মানুষের ভেতরের হিংসা, দ্বেষ, গ্লানি, ক্ষুদ্রতা, সীমাবদ্ধতা ও সংকীর্ণতা সরিয়ে দিয়ে হূদয়ের সবখানে জ্বালিয়ে দেয় অনির্বাণ দীপশিখা। সেখানে আসে হিংসার পরিবর্তে প্রীতি, সখ্য ও ভালোবাসা। বই হতাশাগ্রস্ত কিংবা বিভ্রান্ত মানুষকে জীবনের মহত্ প্রাঙ্গণে পৌঁঁছে দিতে পারে। বই আমাদের আশা জাগায়, স্বপ্ন দেখায় এবং জীবনের সঠিক পথের নির্দেশনা দেয়। বই মানুষের মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করে। বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েই মানুষ গড়ে তুলতে পারে উন্নত ও আনন্দপূর্ণ আদর্শ জীবন।

অজস্র-অনাবিল আনন্দ পুস্তকাগারে স্থবির হয়ে আছে। এ স্থবিরতা ভেঙে সেখান থেকে পাঠককে আনন্দরস আস্বাদন করতে হবে। বই থেকে আনন্দ লাভের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়। ভূগর্ভের অন্ধ জঠরে লুকিয়ে আছে কত সোনা, কিন্তু প্রকৃতি সহজে তা মানুষকে দান করে না; এর জন্য চাই শ্রম, অদম্য উত্সাহ ও মনের একাগ্রতা। তেমনি বইয়ের পৃথিবী থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং আনন্দ লাভ করতে হলেও অধ্যবসায়ী হতে হবে এবং বেশি বেশি বই পড়তে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইদানীং আমাদের বই পড়ার অভ্যাস অনেকটাই কমে গেছে। টিভি, ইন্টারনেট, ফেসবুক এবং মোবাইলফোন আমাদের বই পড়ার অভ্যাস থেকে ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন করে চলেছে। তাই বই পড়ার জন্য এখন আর কেউ সময় দিতে চাইছে না। বই না পড়ার ফলে অসংস্কৃত ও অমার্জিত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ভদ্র, রুচিশীল, সংবেদনশীল ও হূদয়বান মানুষের সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। এ অবস্থায় মানুষের জীবনে আজ এক গভীর আত্মসংকট দেখা দিয়েছে।

আসুন, আমরা বইয়ের কাছে ফিরে যাই। মানুষকে বইমুখী করা তথা বইয়ের পাঠক তৈরির জন্য ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি, প্রকাশনা উত্সব, বইপড়া প্রতিযোগিতা, জন্মদিন, বিবাহ-শাদিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কৃতী ছাত্রছাত্রীদের বই উপহার দেওয়া প্রভৃতি আকর্ষণীয় ও যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। বই পড়ার নিয়মিত অভ্যাস থাকলে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয় এবং মন প্রফুল্ল থাকে। এই অভ্যাস আমাদের মানসিক অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করে এবং মন সংযোগ বাড়িয়ে তোলে। বই-ই ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজের সব অশান্তি, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দূর করার চাবিকাঠি। কাজেই আমাদের বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতেই হবে। কেননা, বই-ই প্রয়োজনীয় ও নিঃস্বার্থ বন্ধু। তাই জীবনকে অধিকতর সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত করতে আমাদের সকলেরই বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানো উচিত। বই হোক আমাদের নিত্যসঙ্গী, বই হোক জাতির উন্নতির সহায়ক।

 

লেখক: মো. আবদুর রহমান, খুলনা

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032830238342285