বইমেলার ঐতিহ্য এখন কিছুটা ম্রিয়মাণ : সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম - দৈনিকশিক্ষা

বইমেলার ঐতিহ্য এখন কিছুটা ম্রিয়মাণ : সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বইমেলার শুরুটা ছিল খুবই সামান্য উদ্যোগে। সেটার উদ্যোক্তা ছিলেন চিত্তরঞ্জন সাহা। মুক্তধারার। তখন বাংলা একাডেমির মাঠে একটি মাত্র স্টল। সেখানে তিনটি ঐতিহ্য সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবেন্ধে আরও জানা যায়, প্রথমত, বইটি মানুষকে কিনতে হবে এবং বই একটি বিনিয়োগের বিষয়। যাঁরা বইটি প্রকাশ করেন তাঁরা অর্থ বিনিয়োগ করেন। এটা প্রবলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আগে তো বাংলাবাজারে গেলেই বইয়ের দেখা মিলত। নিউ মার্কেটে বইয়ের দোকান ছিল, স্টেডিয়াম মার্কেটে বইয়ের দোকান ছিল। বইমেলা আরো কেন্দ্রীয়ভাবে মনের ভেতর নিয়ে এলো। পাশাপাশি নতুন লেখক সৃষ্টিতে যে তাড়না থাকে বা নতুন লেখককে যে সমর্থন দিতে হয় সেটা জরুরি। এত দিনে এই মেলাটা শক্তিশালী হয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।

দ্বিতীয় ঐতিহ্য ছিল লেখকদের সঙ্গে পাঠকদের সম্পর্ক সৃষ্টি। তখন তো মিডিয়ার এত প্রবল আকর্ষণ ছিল না। তখন পাঠকের সঙ্গে লেখকের একটা সম্পর্ক ছিল। এত সরাসরি সম্পর্ক ছিল না। ওই বইমেলায় দেখা যাচ্ছে একটা আড্ডার ঐতিহ্য ছিল। বিখ্যাত লেখক থেকে সেই স্বল্পখ্যাত লেখকরা সেই আড্ডায় যোগ দিতেন। পাঠকরা আমন্ত্রিত ছিল সেই আড্ডায়। এই যে আদান-প্রদান হতো এই আড্ডাগুলোতে, আমি মনে করি আমাদের সাহিত্যের উৎকর্ষের পেছনে তার একটা ভূমিকা আছে। যখন একজন পাঠক লেখককে সামনে থেকে দেখেন, তাঁর কথা শোনেন, তাঁর চিন্তাভাবনা দর্শনকে অনুভব করতে পারেন, তখন ওই পাঠকের জন্য ওই সাহিত্যিকের সাহিত্য একটা আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়।

এই ঐতিহ্য কিছুটা ম্রিয়মাণ হয়েছে এখন। মাঝখানে বাংলা একাডেমিতে লেখক কুঞ্জ নামে একটি কর্নার তৈরি হয়েছিল। কিছুদিন পর সেখানে পুলিশ বসতে শুরু করেছিল। আমি তখন এটির নাম দিয়েছিলাম পুলিশ কুঞ্জ। তাতে কোনো অসুবিধা নেই, কারণ বইমেলায় তো আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। আর বিশেষ করে যখন কয়েকটি আক্রমণ হলো লেখক-ব্লগারদের ওপর, তখন নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। শুরুর দিকে তো নিরাপত্তা নিয়ে কেউ ভাবত না। তখন সত্যিকার খোলামেলা, উদার, প্রাজ্ঞ সব চিন্তার মানুষজন মেলায় যেতেন এবং প্রত্যেকে মেলাকে একটা সুন্দর চোখে দেখতেন। সেটি অবশ্য এখনো আছে। কিন্তু নিরাপত্তার সমস্যাটি আমাদের দেখা দিয়েছে। এটি দ্বিতীয় ঐতিহ্য লেখক এবং পাঠকদের পাশাপাশি থাকা এবং তাঁদের ভেতর একটা অন্তরঙ্গ সংলাপ চালিয়ে যাওয়া। যখন মেলা কিছু বড় হলো, হুমায়ূন আহমেদ মেলায় বসে অটোগ্রাফ দিতে শুরু করলেন এবং হুমায়ুন আজাদ বিশেষ করে আগামী প্রকাশনীতে অটোগ্রাফ দিতেন, স্বাক্ষর দিতেন তাঁর বইয়ের জন্য; তখন সেটা আরেকটু ভিন্নভাবে দেখা দিল। আমি মনে করি, হুমায়ূন আহমেদ এবং হুমায়ুন আজাদ দুজনই পাঠক সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। সবচেয়ে বড় ভূমিকা অবশ্যই হুমায়ূন আহমেদের।

তৃতীয় ঐতিহ্য ছিল, যেটা এখন আর দেখা যায় না। শুধু লেখক ও পাঠক মেলায় থাকবেন তা নয়, শিল্পীরাও মেলায় থাকবেন। এই বাংলা একাডেমির মাঠে এস এম সুলতান ছবি আঁকতেন মাত্র ৫০০ টাকায়; যদিও তখন ৫০০ টাকা অনেক টাকা ছিল। কারো কারো এক মাসের বেতন ছিল।

আমি এরই মধ্যে এবারের বইমেলার প্রশংসা শুনেছি। এবারের বইমেলায় আমি এখনো যাইনি। এবারের বইমেলা নিয়ে আমার প্রত্যাশা, আমরা যেন অনেক ভালো বই পাই। কারণ প্রতিবছর তো একুশকেন্দ্রিক প্রকাশনা। আমি অনেক তরুণের লেখা পড়ি। আমি নিশ্চিত, আমরা এবার কিছু ভালো বই পাব। মেলায় এবার আমার নিজের দুটি বই আসছে। আমার তিনটি উপন্যাস এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো একসঙ্গে পাওয়া যায় না। এবার তিনটি উপন্যাসকে একত্র করে পাঞ্জেরী প্রকাশনী বের করছে ‘উপন্যাস ত্রয়ী’। এটি এরই মধ্যে মেলায় এসে গেছে। আর আমার অনেক গল্প প্রকাশিত হলেও সেগুলো একত্রে করা হয়নি। ওই গল্পগুলোকে একত্র করে অন্য প্রকাশ থেকে বের হচ্ছে ‘গল্প সকল’ প্রথম খণ্ড। এটি আগামী সাত-আট দিনের মধ্যে মেলায় চলে আসবে। সেখানে ৩০টির মতো ছোটগল্প থাকছে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071020126342773