বইমেলায় ডাকসুর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ - দৈনিকশিক্ষা

বইমেলায় ডাকসুর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’

ঢাবি প্রতিনিধি |

রক্তের বিনিময়ে সফলতার শুরু, চূড়ান্ত বিজয়ও এসেছে রক্তস্রোতে। বাঙালি জাতির ইতিহাস- সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও লড়াকু মানসিকতার। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশভাগের পর থেকেই পাকিস্তানি শাসকদের বৈষম্যের শিকার; হার না মানা জাতিও অধিকার আদায়ে সোচ্চার। ৫২’তে ভাষার অধিকার আদায় হয়েছে সালাম, রফিক, জব্বারদের রক্তস্রোতে দাঁড়িয়ে। আর একাত্তরে চুড়ান্ত বিজয়ের বিনিময়েও পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিল ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ।

ব্রিটিশদের কাছ থেকে ভারতীয়দের মুক্ত করতে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।’ পৃথিবীতে স্বাধীনতা লাভের জন্য বেশির ভাগ জাতিকেই রক্ত দিতে হয়েছিলো। আর সে রক্তস্রোতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিতে হয়েছিলো এক এক মহাপুরুষকে। তেমনিভাবে বাঙালি জাতির সকল অর্জনেও মিশে আছে এক মহাপুরুষের নাম। 

বইমেলায় ডাকসু’র -‘বঙ্গবন্ধু-কর্নার’। ছবি সংগৃহীত

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৫৫ বছরের ছোট্ট জীবনে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্বের অগ্রভাগে থেকে যিনি বাঙালিকে এনে দিয়েছিলেন একটি স্বাধীন মানচিত্র। যে মানচিত্রের পতাকা নিয়ে আজও গর্ববোধ করে এ জাতি। ’৫২ থেকে ’৭১ এর দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী প্রদর্শনী হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। চলতি গ্রন্থমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নজরুল মঞ্চে এর অবস্থান। নাম দেয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’।

প্রথমে ছুটির দিন ও বিশেষ দিবসের জন্য এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলেও দর্শনার্থীদের চাহিদায় এখন সেটি নিয়মিত প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের ছবি, বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা, ওই সময়কার বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ, বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ, উক্তি ও দুর্লভ ছবি। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন লেখকের প্রায় ৬০টি বই প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। ডাকসু’র স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরীর উদ্যোগে এ প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা করার মূল কারণ হচ্ছে- গ্রন্থমেলায় আসা তরুণ, শিশু-কিশোরদের সঠিক ইতিহাস জানানো। আমরা মনে করি, এমন প্রদর্শনী নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালি জাতির সঠিক ইতিহাস জানতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’ সাদ বিন কাদের বলেন, ‘প্রদর্শনীতে আমরা ’৫২ থেকে ’৭১ পর্যন্ত সব ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, উক্তি ও তার বিভিন্ন ছবিও সেখানে স্থান পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ছবিও রয়েছে প্রদর্শনীতে।’ আগামী গ্রন্থমেলায়ও এমন আয়োজন রাখা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে থাকলে আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আমরা যদি ফান্ড পাই, তাহলে পরিকল্পনা আছে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনীটা করার। আমরা চাই বিভাগীয় শহরেও এগুলো হোক। আর এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস ফুটে উঠুক তরুণদের কাছে।’ গত কয়েকদিন থেকেই দেখা যায়, মেলায় আসা দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’এ।

বিশেষ করে তরুণদের কাছে এটি অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছে। মেলায় এসে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখছেন, বিভিন্ন তথ্য ও ছবি নিজের মোবাইলের ক্যামেরায় ধারণ করছেন। কেউ কেউ এসব প্রদর্শনীর সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। এমনই একজন মিজানুর রহমান। পাঁচ বছর ছুঁই ছুঁই মেয়ে ফাহমিদা এ্যারিনকে নিয়ে গ্রন্থমেলায় এসেছেন তিনি। বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে মেয়েকে প্রদর্শনীর বিভিন্ন ছবি ও তথ্যচিত্র দেখাচ্ছেন। মেয়েও সেগুলো দেখছে আর নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন বাবার কাছে। মিজানুর রহমানও একে একে সে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘ডাকসুর এমন আয়োজন নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত হবে এবং দেশের জন্য আত্মত্যাগের মানসিকতা তৈরি হবে। আমি চাই এটি প্রতিবছরই নিয়মিত হোক।’

সোহ্‌রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ইসরাত জাহান বলেন, ‘অনেক অজানা তথ্যই আজ এখানে এসে জানলাম। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলেছে প্রদর্শনীতে। এমন আয়োজন ইতিহাসের সঠিক তথ্য জানতে তরুণদের সাহায্য করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’ এদিকে, গত ১৭দিনে গ্রন্থমেলায় নতুন বই এসেছে ২ হাজার ৪৭৫টি। এ ষোল দিনে বাংলা একাডেমির নিজস্ব বিক্রয় ১ কোটি ৯ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩১ টাকা। 

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060718059539795