বিয়েতে প্রেমিকের অস্বীকৃতি এবং এরপর বখাটেদের নির্যাতন। এই অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন কলেজছাত্রী তানিয়া বেগম। শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামের বাড়ি থেকে তার ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তানিয়া মধ্যেরচর মীরবাড়ির মিলন মীরের মেয়ে। তিনি স্থানীয় জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তানিয়া পড়াশোনার পাশাপাশি পৌর শহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার সাজেদা আলাল হাসপাতালে চাকরি করতেন। সেখানকার ফার্মেসিতে চাকরি করতেন উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাধে দু'জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রেমিক মিজানুর রহমান তানিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়িতে যান।
বিষয়টি প্রতিবেশীদের নজরে পড়লে তারা মিজানকে আটক করেন। পরদিন শুক্রবার সকালে মিজানের অভিভাবকদের নিয়ে সালিশে বসেন প্রতিবেশীরা। এ সময় তানিয়ার অভিভাবকরা তানিয়াকে বিয়ে করতে চাপ সৃষ্টি করলে তাতে অস্বীকৃতি জানান মিজান। পরে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে কৌশলে মিজানকে ছাড়িয়ে দেন সালিশকারীদের কয়েকজন।
ওই ঘটনার পর এলাকার কয়েকজন বখাটে শুক্রবার দিনে ও রাতভর তানিয়াসহ পরিবারের লোকজনকে নানাভাবে অপমান করে। অশ্লীল কথা বলে এবং ঘরে ইট-পাটকেল ছুড়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। গতকাল সকালেও বাড়িতে গিয়ে নানা রকমের অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে এবং তানিয়া ও তার মা শেফালি বেগমকে ঘর থেকে টেনে বের করে আনার চেষ্টা করে। এসব অপমান সহ্য করতে না পেরে সকাল ১১টার দিকে তানিয়া নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভৈরব থানার ওসি মোখলেছুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জে পাঠানো হয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।