এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনার চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর বখাটেদের হামলায় ২০ এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ২১ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৫জন ছাত্রী রয়েছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের পাটুয়া আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে রোববার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, বহিরাগত মেহেদী, মাসুম মাস্টার, তছলিম মৃধাসহ ১০ থেকে ১২ জন বখাটে পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। আহতদের মধ্যে মামুন হোসেন, রেজাউল গাজী, শাকিল গাজী, জুয়েল হোসেন, শাওন হোসেন ও নিপুসহ সাতজনকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতরা হচ্ছে সুমাইয়া, রহিমা, রীপা, তানজিলা, জুলিয়া, মুনমুন, সাদিকুননীরা, রিতা, মোনালিসা, লামিয়া, রিয়ামনি, মনিয়ম, শারমিন, বুশরা ও রিয়া। আহতদের মধ্যে দশম শ্রেণির ছাত্রী রিয়া ছাড়া বাকিরা এবছর এসএসসি পরীক্ষার্থী। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি অভিভাবক বজলু প্যাদা জানান, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মাসুম বখাটে ও মাদকসেবী। তার মেয়েকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
হামলার সময় ছাত্রছাত্রীদের আর্তচিৎকারে গোটা এলাকা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয়ের পাঠদান। খবর পেয়ে কলাপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, হঠাৎ করে বাইরে থেকে ১০-১২জন ছেলে এসে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের কাছে যে টাকা চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে তা দিতে বলে। না দিলে অফিস সহকারী মাসুম শিক্ষার্থীদের উপর হামলার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনার বিচার না হলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে বলে জানান। তাঁদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী। তারাও এ হামলায় জড়িতদের প্রকাশ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ওসি মো. এনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনা শোনার সঙ্গে একজন কর্মকর্তাকে ফোর্সসহ পাঠিয়ে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় অভিযুক্ত অফিস সহকারী মো. মাসুম জানান, ছাত্ররা ক্লাসে বসে আগে মারামারি করেছে যা তখনই ফয়সালা করা হয়। কিন্তু তারপর ছাত্ররা ফের স্কুলের নিচে গিয়ে মারামারি শুরু করে। তবে যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা তাঁর (মাসুমের) বাড়ির ছেলে বলে তাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন।