বঞ্চনার মাঝে খানিকটা স্বস্তি: প্রাথমিকে চলতি দায়িত্ব - দৈনিকশিক্ষা

বঞ্চনার মাঝে খানিকটা স্বস্তি: প্রাথমিকে চলতি দায়িত্ব

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকেরা সবচেয়ে বেশি অধিকার বঞ্চিত। অধিকার হরণ নিয়ে কতিপয় দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করছি। ভ্যাকেশনাল বিভাগের কর্মচারী দেখিয়ে ননভ্যাকেশনাল সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে যেমন অর্জিত ছুটি ২টার পরিবর্তে ১টা, পি আর এল ১২ মাসের মূল বেতনের অর্ধেক, ল্যাম্পগ্রান্ড কম টাকা দেওয়া, শ্রান্তিবিনোদন ভাতা প্রদানে ১৫ দিনের ছুটি ভোগ করতে না দেওয়া, জাতীয় দিবসসহ বিশেষ দিবসে ছুটির তালিকায় ছুটি দেখিয়ে কাজ করানোসহ প্রধান শিক্ষকের হাতে সংরক্ষিত ছুটি দেখিয়ে পায়ে শিকল পরিয়ে ছুটি ভোগের অধিকার হরণ অন্যতম। সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে সমুদয় পাওনা না দিয়ে শিক্ষকদের অফিসমুখী করে রাখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত বেতন স্কেল অর্থমন্ত্রণালয়ের জিও জারি সত্ত্বেও ২ বছর পর দেওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর আজও সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল প্রধান শিক্ষকের একধাপ নিচে ও প্রধান শিক্ষকদের বেতনের অসঙ্গতি ৩ বছর যাবৎ ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। দীর্ঘ ৯ বছর প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি না দেওয়ায় হাজারে হাজারে শিক্ষককে বঞ্চিত হয়ে অবসরে বা মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। অগণিত বঞ্চনার মাঝে প্রাথমিক শিক্ষকদের কাজ করতে হয়। উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ প্রাথমিকের তৃণমূল পর্যায়ে অসংখ্য কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত হয়ে আসছে। ২১ মে ২০১৬ প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরাম ঢাকার বাহিরে থেকে শিক্ষক বদলি, প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্বে পদায়নসহ ৬ দফা দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও মানববন্ধন শেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমীপে পুলিশী নিরাপত্তায় ১০ সদস্যের প্রতিনিধি স্মারকলিপি পেশ করেন। পরবর্তীতে সহস্রাধিক শিক্ষকদের স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন করা হয়। এর ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করে ঢাকায় শিক্ষক বদলি বন্ধ ও ঢাকা শহরে সর্বপ্রথম ২০১৭ সালের জুন মাসে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্ব পদায়ন করা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে স্মারকলিপি/ আবেদনে যে ৬ দফা দাবীনামা সুপারিশ করা হয় সেগুলো হলো:

  •  ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে শিক্ষকদের বদলিনীতি সংশোধন  ও বদলি বন্ধ করা।
  •  প্রধান শিক্ষকদের পদের পদোন্নতির কোনো জটিলতা থাকলে জরুরি ভিত্তিতে সিনিয়র সহকারি শিক্ষকদের  চলতি দায়িত্ব দিয়ে সমস্যা নিরসন ও পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  • প্রাথমিক শিক্ষার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যুগোপযোগী ও কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক, সহকারি উপজেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা।
  • পদোন্নতির মাধ্যমে অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের সর্বস্তরে নিয়োগ দেওয়া।
  • প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে সহকারি শিক্ষকদের বেতন  নির্ধারণ করা। শিক্ষকদের মর্যাদার বৈষম্য সৃষ্টি করা কোন অবস্থায় কাম্য নয়।
  • প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণির আয়ন-ব্যয়ন ক্ষমতাসহ গেজেটেড মর্যাদা  ও  স্কেল প্রদান করা।

ঢাকা শহরে ৮৭ জন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে ২/৩ থানা দূরত্বে পদায়ন করা হয়। শিক্ষকদের দৌড়, ঝাঁপ দিয়েও সকাল সাড়ে ৭টার পূর্বে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দায়িত্ব পালন করা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে অন্তরায়। এ নিষ্ঠুর পদায়ন মন্ত্রণালয়ের হৃদয়ে স্থান পেতে ব্যর্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান একদিন ভোর বেলা পায়ে হেটে ,রিক্সায়, বাসে ও অটোতে বিদ্যায়লগুলো পরিদর্শন করে বাস্তব সমস্যা উপলদ্ধি করুন। দ্রুত কাছাকাছি স্থানে বদলি করে মানসস্মত প্রাথমিক শিক্ষা প্রাণহীন হওয়া থেকে রক্ষা করুন।কাছাকাছি বদলির কার্যক্রম তরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভাগীয় উপপরিচালক, ঢাকাকে দায়িত্ব প্রদান করা হলে শিক্ষকদের নাগালে আবেদন করে দ্রুত সমস্যার সমাধান সম্ভব। মন্ত্রণালয়ে প্রবেশের বিড়ম্বনা থেকে শিক্ষকরা মুক্ত থাকবেন। দেশব্যাপী কাছাকাছি পদায়নের শিক্ষক নেতৃত্বে নামধারী চক্র অবৈধ বাণিজ্যের মহড়া দিচ্ছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষায় সকল অবৈধ লেনদেনের ব্যাপারে শিক্ষক সমাজসহ সংশ্লিষ্টদের সর্তক থাকার আহ্বান জানাই। প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরামের মূলমন্ত্র হলো: সংগঠন যার যার, অধিকার সবার।প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষকদের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে সকল সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন আজকের প্রত্যাশা।

মো. সিদ্দিকুর রহমান: আহবায়ক, প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরাম ও দৈনিক শিক্ষার সম্পাদকীয় উপদেষ্টা।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038490295410156