প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলির নীতিমালা অমান্য করে এক শিক্ষকের বদলি করায় বাগেরহাটে সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তি না মেনে এ বদলির ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্তাব্যক্তিরাও।
জানা যায়, ১লা জানুয়ারি শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া শুরু হয়। পৌর এলাকার এসএস জোহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে একাধিক শিক্ষক আবেদন করেন। যাদের মধ্যে কোনো কোনো শিক্ষকের চাকরির সময়কাল ১৫ থেকে ২০ বছরেরও বেশি।
পৌরসভার বাইরে সদর উপজেলার কুরশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুন্নাহার গত ১৫ই জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলির নীতিমালা অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা।বদলির নীতিমালা অনুযায়ী একজন শিক্ষক একবার বদলির পর তিন বছর পূর্ণ না হলে অন্যত্র বদলি হতে পারবেন না। অথচ মাত্র ৮ মাসের মাথায় তিনি বদলি হয়েছেন।
কামরুন্নাহার ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে খুলনা জেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন। যার চাকরি সময়কাল এখনো ৩ বছর পূর্ণ হয়নি। এরপর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে এপ্রিল মাসে জেলা-বদলি হয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলার ৩৩নং কুরশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন।
বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে কামরুন্নাহার জানান, মোল্লা আবুবকর ছিদ্দিক নামে আমার এক আত্মীয় সচিবালয়ে চাকরি করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে বদলির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি শুধু কাগজপত্র ওই আত্মীয়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। আবেদনপত্রের স্বাক্ষরটিও নিজের নয় বলে জানান।
বাগেরহাট সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পূরবী দাস বলেন, আমরা ওই শিক্ষকের বদলির জন্য কোনো প্রস্তাব জেলা শিক্ষা অফিস বা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবরে পাঠাইনি। ওই শিক্ষক আমাদের কাছে বদলির কোনো আবেদনও করেননি। তিনি ডিজি অফিস থেকে সরাসরি বদলির আদেশ নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। আমি ডিজি অফিসের সরাসরি কোনো অদেশনামা পাইনি। জেলা অফিস থেকে একটি আদেশের ফটোকপি আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার দীর্ঘ চাকরি জীবনে যা জানি, ডিজি অফিস নীতিমালা অনুযায়ী সবকিছু করে। এক্ষেত্রে কীভাবে কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে ঘটনাটির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. করিব উদ্দিন বলেন, গত ১৩ই জানুয়ারি ইমেইলে ([email protected]) যুগ্ম সচিব, পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন) খান মো. নুরুল আমিন স্বাক্ষরিত একটি অদেশনামা পেয়েছি। সেই আদেশনামা অনুযায়ী আমরা ওই শিক্ষকের যোগদানের ব্যবস্থা করেছি।
তবে বদলির মাত্র ৮ মাসের মাথায় তিনি কীভাবে আবার বদলির আদেশ পেলেন জানতে চাইলে বলেন, ডিজি অফিসের আদেশ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।