এক কিলোগ্রাম বলতে এত দিন জানা ছিল, প্যারিসের উপকণ্ঠে সেন্ট ক্লাউডে রাখা প্ল্যাটিনাম-ইরিডিয়ামের তৈরি একটি সিলিন্ডার। যা এখনো রাখা আছে দুইটি কাচের জারের ভেতর। ১৩০ বছর ধরে এটিই ছিল এক কিলোগ্রামের মাপ। আজ সোমবার বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস থেকে তা আর বলা হবে না।
আজ ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির হান্টিংটন হলে কিলোগ্রাম, অ্যাম্পিয়ার, কেলভিন ইত্যাদি ইউনিটের নতুন সংজ্ঞা শোনাবেন নোবেলজয়ী পদার্থবিদ উলফগ্যাং কেটের্লে।
এসআই ইউনিটকে আরো নিখুঁত করতে বিজ্ঞানীরা এমনভাবে ইউনিটগুলোর ব্যাখ্যা দেবেন, যাতে সেই উপায়ে মাপটি চিরকালীন থাকে। কারণ প্ল্যাটিনাম-ইরিডিয়াম সংকর ধাতুতে তৈরি এক কিলোগ্রাম ভরটি ১৩০ বছরে ৫০ মাইক্রোগ্রামের মতো কমে গেছে।
এ অসুবিধা দূর করতে পদার্থবিদ্যার কিছু ধ্রুবক সংখ্যার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে পরিমাপের সংজ্ঞায়। যেমন কিলোগ্রামের ক্ষেত্রে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে প্ল্যাংকের ধ্রুবকের (h)। যার মান ৬.৬২৬০৭০১৫x১০-৩৪ (মিটার)২ কিলোগ্রাম/সেকেন্ড। নোবেলজয়ী পদার্থবিদ কেটের্লে যে গণনা করে দেখিয়েছেন, তাতে নির্দিষ্ট কিছুসংখ্যক ফোটনের ভর এক কিলোগ্রামের সমান বলা যায়।
ফোটন কণার মাধ্যমে সংজ্ঞা তৈরি হলে তার পরিমাপে গলদ থাকবে না। যেমন কেটের্লের গণনা দেখিয়েছে, সিজিয়াম পরমাণুর একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘের ১.৪৭৫৫২১৪x১০৪০ গুলো ফোটনের ভর এক কিলোগ্রাম। এবার আর মুদিখানার দোকানে এক কিলোগ্রামের বাটখারার বদলে ফোটন গুনে ওজন করার ঘটনা ঘটবে না। এ নতুন সংজ্ঞা বিজ্ঞানীরা এ কারণে তৈরি করছেন, যাতে পরিমাপটি সব সময় ধ্রুবক থাকে।
কেটের্লের কথায়, ‘ফোটন, পরমাণু, তরঙ্গদৈর্ঘ্য মাপার প্রতিটি নতুন পদ্ধতি যত নিখুঁত হবে, ভরের মাপও তত নিখুঁত হবে। মানুষের তৈরি কোনো বস্তু এত নিখুঁতভাবে পরিমাপ রাখতে পারবে না।