জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার মুখে গতকাল মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। প্রশাসনের এই ঘোষণাকে উপেক্ষা করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংহতি সমাবেশ শুরু করে আন্দোলনকারীরা। সংহতি সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলর্মী বলেন, প্রত্যেকটা লড়াই সংগ্রামেই শাসকরা হামলা চালিয়ে এসেছে। এই উপাচার্যও তাই করেছেন।
এর চেয়ে নিকৃষ্ট কাজ আর হতে পারে না। গতকালের হামলার পর উপাচার্যকে বরখাস্ত করতে মাননীয় আচার্যের কাছে আমরা অনুরোধ জানাই।
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, আমরা তাকে তদন্ত কমিটি করার দাবি জানিয়েছিলাম। আমরা তিনমাস নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে এসেছি। তাকে অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এটা তাদের দলীয় বৈঠক ছিলো।
তিনি আরো বলেন, উপাচার্য মিথ্যাচার করলে তিনি স্বপদে বহাল থাকতে পারেন না। তিনি শুধু উপাচার্যের পদে নয় শিক্ষক হিসেবে বহাল থাকার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ভিন্নমত পোষণ করায় ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। জাবির শিক্ষার্থীরা অতীতেও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। এটা দেশের জনগণকে আরেকবার জানান দেয়ার সময়।
তাজরীন ইসলাম তন্বী বলেন, উপাচার্য হামলার ঘটনাকে আনন্দের দিন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। যেটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমরা ছাত্রীরা গতকাল তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেছি। আবার তালা ভেঙে আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এর আগে সকাল ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এছাড়া প্রীতিতলা হলে তালা ভেঙ্গে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন ছাত্ররীরা। অন্যদিকে দুপুরের মধ্যে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করলে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানান প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ। তিনি বলেন, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।
এর ভেতরে শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়লে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে পুলিশ দিয়ে হল খালি করতে পারে। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগ, আন্দোলনকারীসহ সব আবাসিক ছাত্রদের হল থেকে বের করে দেওয়া হবে।