কুড়িগ্রামে রৌমারীতে এক টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নব নির্মিত একটি টিনশেডের পাকা ভবন বন্যার পানির স্রোতে ধসে গেছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তার পড়েছেন। চলতি বছরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠ পেরিয়ে ভবনের পাশ দিয়ে চলে যওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। আর বানের স্রোতে ভাঙনে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির একটি টিনশেডের পাকা ভবন ধসে গেছে। ভবনটি একদিনও ব্যবহার করতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীরা।
প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটিতে প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এতে ২৭জন শিক্ষক ও কর্মচারী হিসেবে আছেন। প্রতিষ্ঠানের নামে ১ দশমিক ০৬ একর জমি রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নব নির্মিত পাকা ভবন রক্ষা করতে বাঁশের বেড়া ও বালুভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করলেও পানির স্রোতে তা রক্ষা করতে পারেনি। একইভাবে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ভয়াবহ বন্যায় কলেজে যাওয়ার একমাত্র ব্রিজটি পানির স্রোতে ভেঙ্গে গেলেও এখনও সংস্কার করা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কলেজ যেতে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
কলেজের একাদশ শ্রেণির লিমন আহমেদ, আরফিনা পারভীন, কবিতা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রাস্তা ও ব্রিজ না থাকায় একমাত্র নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলেজে ক্লাস করতে হয়। এদিকে বন্যার পানির স্রোতে আমাদের নতুন পাকা ভবন ভেঙে গেছে। তাই এ দুর্ভোগ থেকে রেহায় পেতে দ্রুত একটি ব্রিজ ও চারতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। ওই টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আব্দুস শহিদ বলেন, প্রতিদিন ঝুঁকিপুর্ণ বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে কলেজে যেতে হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মূল্যবান বই খাতাপত্র অনেক সময় পানিতে পড়ে ভেজে নষ্ট হচ্ছে। মাঝে মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে আহত হচ্ছে। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করছে না।
রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. হুমায়ুন কবির দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষার্থীদের জন্য যে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল তা পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। বড় আফসোস ভবনটি নির্মাণের পর একদিনও ব্যবহার করা হয়নি। গতবছর প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার যে ব্রিজটি ছিল সেটাও ভেঙে গেছে। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিকট ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তিনি বলেন, দ্রুত স্থায়ী গাইডওয়ালসহ একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের নিকট কামনা করছি।
এ প্রসঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পানির স্রোতে সেই পাকাভবন একটি ঘর ভেঙে যায়। বন্যার পরে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি সংস্কার করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।