বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বরগুনা শহরে দিনদুপুরে বহু মানুষের সামনে রিফাত শরীফ নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা এখন দেশজুড়ে আলোচনার বিষয়।
এ ঘটনার তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয় যখন হত্যাকাণ্ডের ২১ দিন পর রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ছোট এই জেলা শহরে একটি হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতায় বাংলাদেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়ে যায়, যখন এর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আর এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং এরপর রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের সংশ্লিষ্টতা, সঙ্গে মাদক কারবার জড়িত থাকার অভিযোগ পুরো ঘটনাকে ভিন্ন এক মাত্রা দেয়—অভিযোগ ওঠে যে বড় কিছু আড়াল করতেই পেছন থেকে ক্ষমতাশালীরা কলকাঠি নাড়ছেন। কালের কন্ঠের এক নিবন্ধে এসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। নিবন্ধটি লিখেছেন আকবর হোসেন।
আমি বরগুনায় বিভিন্ন পেশার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা কিছু অভিযোগ তুলেছে। যে রাজনৈতিক মহলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের সামনে রয়েছেন বরগুনার একটি আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং তাঁর আইনজীবী পুত্র সুনাম দেবনাথ।
এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশের সঙ্গে কথিত এক বন্দুকযুদ্ধে ঘটনার কয়েক দিন পরই নিহত হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, নয়ন বন্ড নামে বরগুনাবাসীর কাছে পরিচিত এই সাব্বির আহম্মেদ ওই শহরে একটি গ্যাংয়ের নেতা, যাদের মদদ দেন মি. শম্ভুর পুত্র। আমি বরগুনা শহরে থাকার সময় সুনাম দেবনাথের সঙ্গে কথা বলি; কিন্তু তিনি কোনো সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি। আর তিন দিন চেষ্টা করেও তাঁর পিতার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে বিবিসি বাংলার কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিতা-পুত্র দুজনেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
হত্যাকাণ্ডে মিন্নি ফ্যাক্টর?
মিন্নির সঙ্গে রিফাত শরীফের প্রেমের সম্পর্ক ছিল দেড় থেকে দুই বছরের মতো—বিবিসি বাংলার কাছে এমনটা দাবি করেছেন মিন্নির বাবা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। দুই পরিবারের সূত্রেই বলা হয়েছে, রিফাত শরীফের মাধ্যমেই নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির পরিচয় হয়েছিল। নিহত রিফাত শরীফ ও নয়ন বন্ড—দুজনেই স্কুলজীবন থেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং একসময় তাঁরা দুজনেই একই গ্যাংয়ে জড়িয়ে পড়েন।
নয়ন বন্ডের মা শাহিদা বেগম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তাঁর ছেলে প্রায় আট মাস আগে মিন্নিকে বিয়ে করেন। কথিত ওই বিয়ের একটি কাবিননামাও রয়েছে; কিন্তু বিয়েতে মিন্নির পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না বলে তিনি জানান। কিন্তু মাস দুয়েক আগে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়। এ ঘটনা নয়ন বন্ডকে ক্ষিপ্ত করে বলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ধারণা দেওয়া হয়।
বরগুনা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশ আয়োজন করেই রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মিন্নি যদি নয়ন বন্ডের স্ত্রী হবেন, তাহলে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের সময় নয়ন আপত্তি তোলেননি কেন? কেন তিনি নিশ্চুপ ছিলেন? এই প্রশ্ন তুলেছেন মিন্নির মা মিলি আখতার। মিন্নির পরিবার বলছেন, নয়নের সঙ্গে কথিত বিয়ের বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না। তবে একপর্যায়ে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, নয়ন বন্ড জোর করে মিন্নিকে আটকে রেখে একটি কাবিননামায় স্বাক্ষর আদায় করেন। তিনি আরো বলেন, ‘ও একদিন ওর ছোট কাকার কাছে বলছে, আমার কাছে বলার সুযোগ হয় নাই ওর, এই রকম একটা কাহিনি করছে। আমি মনে করছি ও পোলাপান মানুষ, কী করছে, কী কয়, এটা আমরা তেমন একটা গুরুত্ব দিই নাই।’ এই কাবিননামাকে তিনি বানোয়াট বলে দাবি করেন।
নয়ন বন্ডকে চেনেন—এমন কয়েকজন বলেছেন, মিন্নিকে পাওয়ার জন্য নয়ন বন্ড ব্যাকুল ছিলেন না। যদি তা-ই হতো, তাহলে মিন্নির বিয়েতে নয়ন বন্ড প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারতেন; কিন্তু সেটি তিনি করেননি। তবে নয়ন বন্ড ও রিফাত শরীফের মধ্যে বন্ধুত্ব একসময় শত্রুতায় রূপ নেয় বলে জানিয়েছে বরগুনাবাসী। কারণ নয়ন বন্ডের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রিফাত শরীফ ভিন্ন আরেকটি গ্রুপে যোগ দিয়েছিলেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মাসখানেক আগে একটি মাদকের মামলায় রিফাত শরীফকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়েছিলেন নয়ন বন্ড। এ ছাড়া এই হত্যা মামলার আরেক আসামি রিফাত ফরাজীর সঙ্গেও রিফাত শরীফের দ্বন্দ্ব ছিল। কিছুদিন আগে রিফাত ফরাজীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন রিফাত শরীফ—এমন কথা শোনা গেছে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে। বেশ কিছুদিন আগে বরগুনা শহরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে একটি রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে যান রিফাত শরীফ। তখন ওই বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল পার্কিং করাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সঙ্গে রিফাত শরীফের বচসা হয়। এ বিষয়টি হত্যা মামলার দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী—এই দুই ভাইকে ক্ষুব্ধ করে বলে কেউ কেউ মনে করছে। কারণ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের স্ত্রী তাঁদের খালা।
রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে রিফাত শরীফ তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন কি না—এমন প্রশ্নে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী খুকি অবশ্য বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বিবিসি বাংলার কাছে দাবি করেন, রিফাত শরীফকে তিনি কখনো দেখেননি, বাগিবতণ্ডা তো দূরের কথা।
মিন্নিকে গ্রেপ্তারের জন্য রাজনৈতিক চাপ : রিফাত শরীফকে যারা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারা বরগুনা শহরে সংঘবদ্ধ অপরাধী হিসেবে পরিচিত। বরগুনা শহরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের অবৈধ কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী—এমন অভিযোগ রয়েছে। মাদকের মামলায় তাঁরা বেশ কয়েকবার কারাগারেও গিয়েছিলেন।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের পর যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে, তা হলো, তাঁরা কার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন? কিন্তু এ আলোচনা আড়ালে চলে যেতে থাকে যখন নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ গত ১৩ জুলাই, অর্থাৎ ঘটনার ১৮ দিন পর পুত্রবধূ মিন্নির গ্রেপ্তারের দাবি তোলেন।
বরগুনায় কর্মরত একাধিক সাংবাদিক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ সংবাদ সম্মেলন করাতে দুলাল শরীফকে নিয়ে বরগুনা প্রেস ক্লাবে এসেছিলেন। দুলাল শরীফ যখন সংবাদ সম্মেলন করেন, তখন সুনাম দেবনাথ অন্য আরেকটি কক্ষে অবস্থান করেন। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, রাজনৈতিক চাপে পড়ে দুলাল শরীফ সংবাদ সম্মেলনটি করেছেন কি না! যদিও মি. শরীফ বিবিসি বাংলার কাছে দাবি করেন, তিনি কারো দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন না।
এমপিপুত্রের তৎপরতা : রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড এবং মিন্নির গ্রেপ্তারের পর বরগুনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সুনাম দেবনাথ। অভিযোগ, তিনি তাঁর পিতার রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থেকে মামলার তদন্তে নানা রকম প্রভাব খাটাচ্ছেন। এমন অভিযোগও রয়েছে যে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে নিহতের বাবা দুলাল শরীফকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়ে ক্ষান্ত হননি সুনাম দেবনাথ। মিন্নির গ্রেপ্তারের দাবিতে বরগুনা শহরে তাঁর উদ্যোগে সমাবেশও হয়েছে। সুনাম দেবনাথ নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মি. দেবনাথের অনুসারীরা ফেসবুক ও ইউটিউবে এ হত্যাকাণ্ডকে নানাভাবে ‘নারীঘটিত বিষয়’ হিসেবে প্রমাণের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা সবাইকে বিস্মিত করেছে তা হলো, মিন্নিকে গ্রেপ্তারের পরের দিন যখন আদালতে উপস্থাপন করা হয়, তখন তাঁর পক্ষে বরগুনায় কোনো আইনজীবী পাওয়া যায়নি।
মিন্নির বাবা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, মেয়ের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানোর জন্য তিনি তিনজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে তিনি টাকাও দেন। কিন্তু তাঁরা সবাই শেষ মুহূর্তে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের পুত্র সুনাম দেবনাথ নিজে বরগুনার একজন আইনজীবী। গত ২৭ জুন তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমরা বরগুনার আইনজীবীরা রিফাত শরীফ হত্যাকারীদের কোনো আইনি সহায়তা দেব না, একজনকেও না। আশা করি আমার এই প্রস্তাবের সাথে সকল আইনজীবী একমত হবেন।’
মি. দেবনাথের এই ফেসবুক পোস্ট আইনজীবীদের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি করে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন আইনজীবী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনার একজন সিনিয়র আইনজীবী বিবিসি বাংলাকে বলেন, মিন্নিকে যেদিন আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছিল, সেদিন মি. দেবনাথের অনুসারীরা আইনজীবীদের ‘অহেতুক ভিড় না করার’ পরামর্শ দেয়। ‘তখনই আমরা বুঝতে পারলাম যে বিষয়টা কোন দিকে যাচ্ছে’—বলছিলেন ওই আইনজীবী। তাঁর মতে, আইনজীবীদের অনেকেই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
কেন রাজনৈতিক চাপ : রিফাত হত্যাকাণ্ডের পর আলোচনা জোরদার হতে থাকে যে এই অপরাধের মদদদাতা কারা?
রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার জন্য যাঁরা প্রত্যক্ষভাবে দায়ী বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ ১৬ জন। বরগুনা শহরে মাদকসহ নানা অপরাধ তৎপরতার সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এই অপরাধীচক্রের পেছনে রাজনৈতিক মদদ ছিল। বেশ কয়েকজন সদস্য মাদকের মামলায় কারাগারে গেলেও তাঁদের বেশিদিন আটকে রাখা সম্ভব হয়নি এবং রাজনৈতিক প্রভাবেই তাঁরা জেল থেকে বের হয়ে দ্বিগুণ উদ্যমে অপরাধে জড়িয়ে পড়েন—বরগুনা শহরে এমন অভিযোগ বেশ জোরালো।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকেই মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা। বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক প্রশ্ন তোলেন, ‘মাদকটা কে চালায়? মাদকের পেছনে কারা জড়িত? এই যে নয়ন কাদের প্রশ্রয়ে এত দূর এসেছে?’
বিষয়গুলো নিয়ে সুনাম দেবনাথের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি। সাক্ষাৎকারের জন্য বিবিসির পক্ষ থেকে টেলিফোন করা হলে মি. দেবনাথ বলেন, ‘কয়েকটা মিডিয়া এরই মধ্যে এ ঘটনায় আমাকে ভিলেন বানিয়েছে। সে জন্য এই মুহূর্তে কোনো সাক্ষাৎকার দিতে চাচ্ছি না।’
স্থানীয় রাজনীতি : বরগুনার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই বেশ প্রভাবশালী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তবে দলটির নেতারা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের কিছুদিন পর থেকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এখন মি. শম্ভুর বিপক্ষে। কয়েক বছর আগে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা একত্র হয়ে মি. শম্ভুর বিপক্ষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অভিযোগও দাখিল করেছেন।
একজন সংসদ সদস্য হিসেবে বরগুনার প্রশাসনে তাঁর প্রভাব থাকলেও বরগুনা আওয়ামী লীগে তিনি অনেকের কাছেই অপছন্দের পাত্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বিবিসি বাংলাকে বলেন, দলের ভেতরে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে যাওয়ার পর আধিপত্য ধরে রাখতে অপরাধীচক্র গড়ে তোলেন মি. শম্ভুর ছেলে। সে জন্য এই সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্রের কর্মকাণ্ড আড়াল করতেই রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডকে নারীঘটিত বিষয় হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিজের নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে খুব কম মানুষই আগ্রহী বরগুনা শহরে। তবে তাদের ধারণা, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে বন্দি হয়ে ভিন্নদিকে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিষয়গুলো নিয়ে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে বারবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি টেলিফোন ধরেননি। সংসদ ওয়েবসাইটে তাঁর দুটি টেলিফোন নম্বর দেওয়া আছে। এর একটি বন্ধ, অন্যটি তাঁর স্ত্রী রিসিভ করে বলেছেন যে তিনি বাড়িতে নেই। অভিযোগের বিস্তারিত জানিয়ে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর দুটি মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনিও বিবিসি বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন গত ১৮ জুলাই। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমার এত বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কোনো গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে চলিনি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের সঙ্গে আমার বা আমার দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সবার মতো আমিও চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক। এ ক্ষেত্রে আমি সব ধরনের সহযোগিতা দিতে রাজি আছি।’
অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেছেন ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
আর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির দাবি করেছেন, এই মামলার তদন্তে কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই।