বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটে স্থানীয় শিক্ষাবিদরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার দাবিতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদেরকে অবহেলা-অবজ্ঞা করায় চলমান সংকট নিরসনে তারা কেউ এগিয়ে আসছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলে প্রথম সিন্ডিকেট সভায় বরিশালের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সদস্য রাখা হলেও পরবর্তীকালে তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়।
প্রথম উপাচার্য তাদেরকে মূল্যায়ন করলেও দ্বিতীয় উপাচার্য অবমূল্যায়ন করেন। এছাড়া সিন্ডিকেটে যারাই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন তাদেরকে নানা কৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে এ সংকট মোকাবিলায় যাদের কথা বলার ছিল তারা কোনো দায়িত্বে না থাকায় কেউ এগিয়ে আসছেন না।
২৬ মার্চ থেকে টানা ৩৫ দিনের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক যে সিন্ডিকেট রেখে গেছেন সেখানে তিনি সভাপতিসহ ১৬ জনের মধ্যে বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকা সিন্ডিকেট সদস্যের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, ওয়ারপোর সাবেক মহাপরিচালক রয়েছেন।
সিন্ডিকেটের সদস্যরা বলছেন সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন উপাচার্য। কারণ তিনি পদাধিকার বলেন সভাপতি। উপাচার্য না থাকায় সভা হচ্ছে না ফলে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। সিন্ডিকেটের সাবেক সদস্যরা জানান, চাইলে সিন্ডিকেট সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর শাহ সাজেদা জানান, উপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ পদ শূন্য থাকায় চরম সংকটের মধ্যে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এ অবস্থা কারো কাম্য ছিলো না।
তিনি এ থেকে উত্তোরণসহ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে এখানকার শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ত রাখার দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ খান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. হানিফ ও বরিশালের ইতিহাসবিদ সাবেক সচিব ড. সিরাজ উদ্দিন আহমেদকে সিন্ডিকেট সদস্য করেছিলেন তিনি।
পরে উপাচার্য ড. ইমামুল হক প্রথম সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর মো. হানিফ ও ড. সিরাজ উদ্দিন আহমেদকে বাদ দেন। সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর মো. হানিফ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত হতাশাবাঞ্জক। এ নিয়ে আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। তিনি এ সংকট নিরসনে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং দক্ষ ব্যক্তিকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দিয়ে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানান।