শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও যাত্রাবাড়ীর বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকেরা। তারা জানিয়েছেন, ৭০ জন শিক্ষককে প্রতিদিন উপস্থিত হতে হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, অনলাইন ক্লাসের জন্য শিক্ষকদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে,করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আংশিক খোলা রেখে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সরকারি নির্দেশনা দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানের বেশ কজন শিক্ষকের প্রতিদিন উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে দুই গ্রুপে শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীরা এসে আড্ডা-গল্পে সময় পার করে বাড়ি যাচ্ছেন। এতে করে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে অনেক শিক্ষকের অভিযোগ।
শিক্ষকদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ ভূইয়া আব্দুর রহমান ও সভাপতি আব্দুস সালাম বাবুর সেচ্ছাচারিতায় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কারণে অকারণে তারা শিক্ষকদের নানাভাবে লাঞ্ছিত করে থাকেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সকল শিক্ষকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তারা বলেন, বিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাসে প্রতিদিন সকল শিক্ষকের ক্লাস থাকে না, ক্লাস না থাকলে স্কুলে আসতে না চাইলে চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত ১৮৩ শিক্ষক-কর্মচারি রয়েছেন। যার মধ্যে শতাধিক নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। তাদের গত মার্চ মাস থেকে বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে না। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের গত ৫ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে না। ঈদেও তাদের বেতন-বোনাস দেয়া হয়নি।
শিক্ষকদের বেতন না দিয়ে চলতি সপ্তাহে ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার চেহলাম পালন করা হয় বর্ণমালা স্কুলে। স্কুলের ফান্ডের অর্থে সেখানে ৫শ মানুষের উপস্থিতিতে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষকদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ভূঁইয়া আব্দুর রহমান বলেন,অনলাইন ক্লাসের জন্য শিক্ষকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন সকালে-বিকেলে দুটি ধাপে শিক্ষকরা উপস্থিত হচ্ছেন।
অধ্যক্ষ ভূঁইয়া আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত ৬৭ জন শিক্ষক থাকলেও প্রতিদিন সকল শিক্ষক আসেন না,শুধু যাদের ক্লাস থাকে এমন ৩০ জনের মতো শিক্ষক উপস্থিত হয়ে থাকেন। সকল শিক্ষকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার তথ্যটি মিথ্যা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।’