বর্ধিত চাঁদা প্রত্যাহারের দাবিতে আল্টিমেটাম - দৈনিকশিক্ষা

বর্ধিত চাঁদা প্রত্যাহারের দাবিতে আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আগামী ২ মের মধ্যে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ চাঁদা কর্তনের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ড ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল)  রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। 

শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আবুল  বাশার হাওলাদার  বলেন, দ্রুত সুবিধা দিতে বেতন থেকে টাকা কাটতে  হলে অবশ্যই  সংসদে পাস হতে হবে।  একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন থেকে একটা টাকা কাটার এখতিয়ার কারো নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্যায় করেছে। এ প্রজ্ঞাপন অবৈধ। শিক্ষক নামধারী কিছু অসৎ নেতা আমলাদের সাথে যোগসাজশ করে এটা করেছে। শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা নিয়ে অনেকে হেলিকপ্টারে বিভিন্ন এলাকা সফর করেন, গাড়ি-বাড়ি করেছেন। শিক্ষকদের একটি টাকাও আত্মসাৎ করার এখতিয়ার কারো নেই। যারা শিক্ষকদের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলে এদেরকে চিহ্নিত করে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউনিয়নের মহাসচিব মো. জসিম উদ্দিন শিকদার বলেন, দেশের শতকরা ৯৭ ভাগের বেশি শিক্ষক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তারা সরকারের কাছ থেকে বেতনের একটি অংশ এমপিওর মাধ্যমে পেয়ে থাকেন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের অর্জন কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ড। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে এ দুইটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা প্রদান জাতীয় সংসদে পাস হয়। তখন থেকে শুধু কল্যাণ ট্রাস্টের ২ শতাংশ চাঁদা কর্তন হতো। পরবর্তী সময়ে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডে ৪ শতাংশ কর্তন করা শুরু হয়। এই দুইটি সংস্থার মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পর এককালীন নির্দিষ্ট হিসাবনুযায়ী অর্থ পেয়ে থাকেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, শিক্ষক-কর্মচারীরা ৪-৫ বছর অপেক্ষা করে তাদের অবসরকালীন টাকা পান। এমনও দেখা গেছে জীবদ্দশায় অনেক শিক্ষক টাকা পাননি। এই দুইটি বোর্ড গঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা শোনা যায়। 
 
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে দীর্ঘ ২০ দিন আমরণ অনশনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি ৫ শতাংশ ইসক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা প্রদান করায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বেসরকারি শিক্ষকদের অনেক দাবি পূরণ হয়েছে। আবার এখনও অনেক দাবি পূরণের আশায় আমরা প্রতীক্ষা করেছি। ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় শিক্ষকদের অতিরিক্ত ৪ শতাংশ চাঁদা কর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। এর ফলে শিক্ষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর পূর্বেও দুইবার প্রজ্ঞাপন জারি করে তা চরম অসন্তোষের মুখে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ৩য় বারের মতো এবার টাকা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কারণ দেখানো হয়েছে শিক্ষকদের অবসরকালীন টাকা দ্রুত দেয়ার জন্য এ চাঁদা কর্তন করা হচ্ছে। কিন্তু কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের টাকার উৎস হিসাবে তিনটি উৎস দেখানো হয়েছে নীতিমালায়। তা হলো- শিক্ষক-কর্মচারীদের চাঁদা, সরকারি অনুদান এবং অন্যান্য।
 
এই তিনটি উৎসের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন থেকে ৬ শতাংশ চাঁদা কর্তন করা হয় এবং সরকারি অনুদান বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। শিক্ষকদের অবসর ভাতা দ্রুত প্রাপ্তির জন্য সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করলেই এর সুষ্ঠু সমাধান সম্ভব। শিক্ষকরা এমনিতেই বেতন বৈষম্যে জর্জরিত হয়ে অর্থকষ্টে দিনযাপন করছেন, তারপর আরও ৪ শতাংশ কর্তন শিক্ষক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের মনে হয়, সরকারের মধ্যে ঘাঁপটি মেরে থাকা একটি  মহল সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টায় লিপ্ত আছেন। তাই বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই এবং এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে প্রত্যাহার করে শিক্ষাঙ্গনে শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি করছি। শিক্ষকরা এমনিতেই অনেক বঞ্চনার শিকার, এরপর এ ধরনের পদক্ষেপ সমীচীন হয়নি। শিক্ষা জাতীয়করণ, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান, কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধার টাকা ৩০ দিনের মধ্যে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শিক্ষক ইউনিয়নের অতিরিক্ত মহাসচিব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ কবির, শিক্ষক ইউনিয়নের বংশাল-কোতয়ালী থানার সভাপতি খান হাসান আয়ূব, কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মুন্সিগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075681209564209