বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ৬টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত সমন্বিত লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এক হাজার ২২৯ সিনিয়র অফিসার পদের জন্য গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রায় ২০ হাজার চাকরিপ্রার্থী অংশ নেন। ফল প্রকাশের আগেই পরীক্ষার দায়িত্ব পাওয়া আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খাতা বিক্রি করে দেয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বাতিলকৃত পরীক্ষা হবে আগামী ২ আগস্ট।
আর ঢাকা শহরে এত সরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ থাকতে বিতর্কিত এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
পরীক্ষা বাতিল বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা বাতিলের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ না করে অনিবার্য কারণে গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে বলা হয়েছে। বাতিলকৃত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি দেয়া হয়েছে আগামী ২ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। রোলের ক্রমানুসারে কোথায় কার পরীক্ষা হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, সমন্বিত আট প্রতিষ্ঠানের লিখিত পরীক্ষা নেয়ার দায়িত্ব পায় আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি খাতা মূল্যায়ন করে ফল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠায়। নিয়মানুসারে ফলের সঠিকতা দেখতে নমুনা ভিত্তিতে খাতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি টিম সেখানে যায়। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পুরাতন খাতা মনে করে ভুল করে সেই খাতা বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে চেষ্টা করেও তা আর ফেরত আনা যায়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ই আবার পরীক্ষা নেবে। এ জন্য বাড়তি কোনো অর্থ তারা পাবে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সমন্বিতভাবে সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগের জন্য গত বছর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর বা চার বছর মেয়াদি স্নাতক বা স্নাতকধারী, যাদের বয়স গত ১ অক্টোবর সর্বোচ্চ ৩০ বছর তারাই অংশ নেয়ার সুযোগ পান। প্রাথমিক যোগ্যতা যাচাই শেষে তাদের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়া হয়। এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য দেশের ২ লাখ ৭২ হাজার জন রেজিস্ট্রেশন করেন। এদের মধ্য থেকে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৯ হাজার ৯০৪ জন, যারা লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত হন। গত ২৫ মে এসব চাকরিপ্রার্থীর লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পরবর্তী সময়ে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে। সেখান থেকে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে জনতা ব্যাংকে ৪০০ জন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ৩৯৭ জন, সোনালী ব্যাংকে ২৬০ জন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ১২ জন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ৩৬ জন ও কর্মসংস্থান ব্যাংকে ১০৭ জন নিয়োগ পাবেন। আর সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশে ৫ জন এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে ১২ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে।