ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গড়ে উঠেছে শিক্ষা উপকরণ জাদুঘর। বাংলাদেশের প্রথম হিসেবে দাবি করা এ শিক্ষা উপকরণ জাদুঘরটি নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজল-ই খোদা পাভেল।
শিশু শিক্ষার্থীদের শিখন স্থায়ী ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ‘টিচিং এইডস মিউজিয়াম’ নামে জাদুঘরটি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে গড়ে তোলা হয়েছে। এতে বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবির সাথে বর্ণনা ও দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৭জন বীরশ্রেষ্ঠ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ও ঐতিহাসিক নিদর্শন, শিশু শ্রম বিষয়ক গ্যালারি, ভাষা আন্দোলন গ্যালারি, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক গ্যালারি, বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী গ্যালারি, বাংলা লিপি ক্রমবির্তনের ইতিহাস গ্যালারি, সৌরমণ্ডল বিষয়ক গ্যালারিসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও গণিত, ইংরেজি বিষয়ের ওপর শিক্ষা উপকরণ তৈরী করে সাজানো হয়েছে জাদুঘরটি।
সপ্তাহে একদিন করে বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এই জাদুঘরে পাঠদান নিয়ে থাকেন শিক্ষকরা। এই শিক্ষা উপকরণ জাদুঘরটির কারণে এরই মধ্যে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার কমে যাওয়াসহ ঝরেপড়া রোধ হয়েছে। সেই সাথে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাতেও ভালো ফলাফল করছে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহরিন আক্তার বলেন, ‘আমাদের শ্রেণির সবাইকে সপ্তাহে একদিন এই জাদুঘরে ঢুকিয়ে ছবি দেখিয়ে পড়ানো হয় এবং আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীসহ বিভিন্ন অজানা তথ্য জানতে পেরেছি।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মাহিন আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের মিউজিয়ামে বই থেকে এবং বইয়ের বাইরে থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি ও সৌরজগত সম্পর্কে জেনেছি, আমরা পৃথিবীর বাইরেও আরও অনেক জগত আছে সেগুলোর সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
সহকারী শিক্ষক গুলসান আক্তার বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় আমরা এই মিউজিয়ামটি গড়ে তুলতে পেরেছি। আমাদের এ উদ্যোগ শিশুদের জন্য, শিশুদের ভীতি দূর করে স্কুলমুখী করা। তাদের বিষয়ভিত্তিক পাঠ যেন সহজ হয় সে জন্য আমরা পৃথক পৃথক গ্যালারি তৈরি করেছি।
শিক্ষা উপকরণ জাদুঘরটির প্রতিষ্ঠাতা ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজল-ই খোদা পাভেল বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে এরকম একটি শিক্ষা উপকরণ মিউজিয়াম করার। যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপকরণ দেখে দেখে শিখতে পারবে। অবশেষে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে সহকারী শিক্ষকদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে টিচিং এইডস মিউজিয়াম নামে শিক্ষা উপকরণ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করি। এখন প্রতিদিন স্কুল শেষে শিক্ষার্থীরা এই মিউজিয়ামে ঘুরে ঘুরে শিক্ষা উপকরণ দেখে বইয়ের বাইরে জ্ঞান অর্জন করছে।