নয় দফা দাবিতে টানা নবম দিনের মতো কর্মসূচি পালন করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এই ব্যানারে এবার তারা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ অভিমুখে লংমার্চের ডাক দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালে শাহবাগে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেয়া হয়। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ‘ধর্ষকের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড’ এমন দায়সারা সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এটা কোনো সমাধান নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে এই আইন ভুক্তভোগীদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। এই আইন কার্যকর হলে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য ধর্ষক ধর্ষণের আলামত মুছে ফেলতে চাইবে।
তিনি বলেন, দেশে ১শ’টা ধর্ষণের মধ্যে মাত্র তিনটি ধর্ষণের বিচার হয়। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং আইন ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় যে অসংখ্য অসঙ্গতি ও জটিলতা আছে তা দূর করার পথে না হেঁটে সরকার মুলা ঝুলানোর রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে।
আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের যে নয় দফা দাবি আছে তা আমরা চালিয়ে যাবো। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৬ ও ১৭ই অক্টোবর ঢাকা থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে পূর্ব ঘোষিত লংমার্চ কর্মসূচি পালন করা হবে। আমরা শাহবাগ, গুলিস্থান, চাষাঢ়া, সোনারগাঁ, চান্দিনা, কুমিল্লা, ফেনী, দাগনভূঞা, চৌমুহনী, একলাসপুর হয়ে মাইজদীতে কর্মসূচির সমাপ্তি টানবো।
বেগমগঞ্জের ওসি ক্লোজড
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে জানান, দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অভিযোগের কারণে বেগমগঞ্জ থানার ওসি মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরীকে ক্লোজ করা হয়েছে। গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের এক নির্দেশে তাকে ক্লোজ করে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের আসামি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থেকে গ্রেপ্তারকৃত একেএম সামছুদ্দিন সুমনকে হস্তান্তর করলে পিবিআই ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। ওই ঘটনার মূলহোতা দেলোয়ারকে র্যাব মঙ্গলবার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে তাকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
সূত্রমতে, সর্বপ্রথম মালয়েশিয়া থেকে এক প্রবাসী গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধারণ করা নির্যাতনের ভিডিওটি বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. হারুনুর রশিদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিয়ে অবগত করেন। কিন্তু ওসি তা আমলে না নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালান।
জানা যায়, এখলাসপুরে দেলোয়ার বাহিনীর গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসী ছাড়াও আরো রয়েছে ৭০-৮০ জনের চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। তারা এখনও সন্ত্রাসী দেলোয়ারের অনুপস্থিতিতে বেগমগঞ্জের এখলাসপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন জুড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নারী নির্যাতনের মত অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। যার নেতৃত্বে রয়েছে সন্ত্রাসী দেলোয়ারের আপন বড় ভাই সন্ত্রাসী আনোয়ার। ওই এলাকায় নিরীহ জনসাধারণের একটাই দাবি সন্ত্রাসী আনোয়ার ও দেলোয়ার বাহিনীর ৭০-৮০ জনের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি সন্ত্রাসী দেলোয়ারের আপন বড় ভাই সন্ত্রাসী আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে তার হ্যান্ডসেটের কললিস্ট ও ভয়েস কল তল্লাশি করলে ওই বাহিনীর তথ্য বেরিয়ে আসবে।