ভোলায় এমপিওভুক্ত মাদরাসার একজন শিক্ষক বাল্যবিয়ে পড়াচ্ছেন বছরের পর বছর ধরে। আবার বাল্যবিবাহ বিরোধী সভায় উপস্থিত হয়ে জোর গলায় কথা বলেন সেই শিক্ষক মহিবুল্যাহ। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি চর কলমী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার। ওই সভায় উপস্থিত ভোলার শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম। বাল্যবিয়ে পড়ানো নিয়ে শিক্ষক মহিবুল্যাহকে বিভিন্ন উপদেশমূলক কথা শোনান ওসি। কিন্তু এগুলো ভালো লাগেনি নিকাহ রেজিস্ট্রারের। তিনি তার শিক্ষক পরিচয় ব্যবহার করে ওসির অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করাচ্ছেন। তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় সচেতন অভিভাবকরা। তারা বলছেন শিক্ষক মহিবুল্যার নিকাহ ব্যবসায় সমস্যা হওয়ায় শিক্ষক পরিচয়ে শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছেন।
জানা যায়, বৃহষ্পতিবার দুপুরে চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার আনজুর হাট সিনিয়র আলিম মাদরাসার সামনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম আনজুরহাট সিনিয়র মাদরাসায় বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং ও মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক সভা করতে আসেন। মাদরাসার হলরুমে সভা শুরুর আগে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মহিবুল্যাহ চর কলমী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার পরিচয় জানার পর ওসি তার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশমূলক কথা হয়।
পূর্বনির্ধারিত সচেতনতামূলক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে ওসি মনিরুল ইসলাম শিক্ষক হয়েও বাল্যবিয়ে পড়ানোয় মহিবুল্যাহর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
শিক্ষক মহিবুল্যাহ সাংবাদিকদের জানান, ওসি তার বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহের অভিযোগ তোলেন। বিবাহ রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে জম্ম নিবন্ধন গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেন ওসি। তার জবাবে মহিবুল্যাহ ‘জম্ম নিবন্ধন গ্রহণযোগ্য বলে গেজেট আছে’ দাবি করায় ওসি তার ওপর চড়াও হন।
শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, আমি ওই ইউনিয়নে বাল্যবিবাহ বেশি হওয়ায় নিকাহ রেজিস্টার হিসেবে মহিবুল্যাহের কাছে জম্ম নিবন্ধন যাচাই-বাছাই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এখন সে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় বলে আমি নাকি তাকে অপমান করেছি।
লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান জানান, আমি বুধবার ছুটিতে ছিলাম। যতটুকু জানি ওই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষককের সাথে ওসির ভুল বুঝাবুঝি থেকে এ মানববন্ধন হয়েছে। মূলত ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময় বাল্যবিবাহ পড়ায়। বিষয়টি ওসি মনিরুল ইসলাম তাকে (মহিবুল্যাহকে) বলছে আপনার বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ পড়ানোর অভিযোগ আছে। তাই সে এগুলো করাচ্ছে।