প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা শিশু ও সেগুলোর শিক্ষকদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তাদের বাড়ির চেয়ে বিদ্যালয়ে বেশি নয় বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে। ১৩১টি বিদ্যালয়ের ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল। এরই মধ্যে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছিল কিনা তা দেখার জন্য করা পরীক্ষায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে একই স্তরের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। তবে ইংল্যান্ডের ১২ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক বিদ্যালয় কর্মী ও শিশুদের ওপর পরিচালিত এ গবেষণাটি গত জুন ও জুলাইয়ের প্রথম দিকে করা হয়েছিল। সে সময় আশপাশে খুব বেশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিল না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব শিশু বিদ্যালয়ে ফিরে আসার পর এটা নিয়ে আরো অধ্যয়নের প্রয়োজন। শিশুরা যেন বিদ্যালয়ে ফিরতে পারে, সেজন্য শিক্ষার্থী ও কর্মীদের পরীক্ষা করা হয়েছিল।
গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দেয়া পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে একটি শিশু এবং দুজন কর্মীসহ মাত্র তিনজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত পেয়েছেন, যা সংগৃহীত নমুনার শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এ তিনজন তাদের সঙ্গে থাকা বা কাজ করাদের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এটা পিএইচইর আগের গবেষণাগুলোকে প্রতিফলিত করে, যা বিদ্যালয়ে কমসংখ্যক সংক্রমণ ও প্রাদুর্ভাব দেখায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, যে শিশু ও কর্মীরা বিদ্যালয়ে কম উপস্থিত হয়েছিল তাদের তুলনায় বেশি ঘন ঘন উপস্থিত হওয়াদের মধ্যে অ্যান্টিবডি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল না। এটা ইঙ্গিত দিতে পারে যে বিদ্যালয়ে সংক্রমণের মাত্রা তারা যে সম্প্রদায়ে বাস করে সেখানকার ভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রাকে প্রতিফলিত করে। তবে কিছু গ্রুপের অ্যান্টিবডি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। তারা ননহোয়াইট, স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকত এবং তাদের লক্ষণও ছিল। গবেষণাটিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্তর্ভুক্ত ছিল না, তাই বড় শিশুদের সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তে উপস্থিত হওয়া যায় না।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের পরামর্শক মহামারী বিশেষজ্ঞ ডা. শামিজ লাদানি বলেছেন, এটি দেশে এ বিষয়ে বৃহত্তম একটি গবেষণা। প্রি-স্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা স্টাফ বা শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে না বলে গবেষণাটি পরামর্শ দেয়। ফলাফলগুলো প্রাথমিক হলেও যেসব বাবা-মা সন্তানদের বিদ্যালয়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের আশ্বস্ত করার মতো।
সূত্র : বিবিসি