বিএড কোর্সে ৮৫ শতাংশ আসনই খালি থাকছে - দৈনিকশিক্ষা

বিএড কোর্সে ৮৫ শতাংশ আসনই খালি থাকছে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ময়মনসিংহ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ একসময় বেশ জমজমাট ছিল। এখানে ভর্তির জন্য বিভিন্ন এলাকার নারী শিক্ষক ও ছাত্রীদের তীব্র প্রতিযোগিতা হতো। ৬৭ বছরের পুরোনো দেশের একমাত্র সরকারি নারী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজটির সেই সুনাম আর নেই। এখন ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) কোর্সে প্রায় ৮৫ শতাংশ আসনই খালি থাকছে। মাস্টার্স অব এডুকেশন (এমএড) কোর্সে খালি ৩৬ শতাংশ আসন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মোশতাক আহমেদ ও জগলুল পাশা।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এখানকার একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, নিয়মিত কোর্সের চেয়ে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে চালু হওয়া স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণের প্রতি কলেজ প্রশাসনের ঝোঁক বেশি। কারণ, এসব প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য আলাদাভাবে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। অবশ্য কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুর রহমান দাবি করেন, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সরকারের প্রকল্পের অধীনে নিয়মানুযায়ী হয়ে থাকে।

নারীশিক্ষার অগ্রগতি ও শিক্ষকতা পেশায় নারীদের প্রশিক্ষণ দিতে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা), ময়মনসিংহ। সারা দেশের ১৪টি সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের মধ্যে এটি একমাত্র নারী কলেজ। ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত মুক্তাগাছার তৎকালীন জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্যের ছেলে (দত্তক) শশীকান্ত আচার্যের নামে প্রতিষ্ঠিত বাসভবন ‘শশী লজে’ ২০১৫ পর্যন্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হতো। পরে শশী লজ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন হওয়ায় এখন কলেজের মূল একাডেমিক ভবনে সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিন একর জায়গার ওপর কলেজটি প্রতিষ্ঠিত। এখানে থাকার জন্য একটি ছাত্রীনিবাস (দুটি ব্লক) রয়েছে।

কলেজের তথ্য বলছে, শুরু থেকেই এখানে এক বছর মেয়াদি নিয়মিত বিএড এবং এমএড কোর্সে পড়ানো হচ্ছে।এর পাশাপাশি ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চার বছর মেয়াদি বিএড (সম্মান) কোর্সও চালু করা হয়। কিন্তু বিএডে ধারাবাহিকভাবে ছাত্রীসংখ্যা কমছে। এই কোর্সে মোট আসন ৫৫০টি। কিন্তু ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এই কোর্সে ১১৫ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছিলেন। চলতি বছর ভর্তি হওয়া ছাত্রীর সংখ্যা কমে হয় ৮৪ জন। আর আসন্ন শিক্ষাবর্ষের (২০২০) জন্য আবেদনই করেছেন মাত্র ৫৯ জন।

এমএড কোর্সে থাকা ১০০ আসনও পূরণ হয় না। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এমএডে মাত্র ১১ জন ভর্তি হয়েছিলেন। চলতি বছর এই সংখ্যা ছিল ৪২ জন। আর ২০২০ শিক্ষাবর্ষে এসে এই সংখ্যা হয়েছে ৬৪ জন। বিএড ও এমএড কোর্সে শিক্ষক ছাড়া অন্য ছাত্রীরাও পড়তে পারেন। তবে ১০০ আসনের বিএড (সম্মান) কোর্সে কখনো সব আসন পূরণ হয়, কখনো কিছু খালি থাকে। যেমন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ১০১ জন ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চলতি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে আছেন ৯৭ জন ছাত্রী।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুর রহমান বলেছেন, এখন বিভিন্ন এলাকায় অনেক বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে বাড়ির কাছে থেকেও অনেকে বিএড-এমএড করতে পারেন। আবার তাঁদের কলেজের পাশেই সরকারি আরেকটি প্রশিক্ষণ কলেজ থাকায় সেখানেও অনেক ছাত্রী পড়তে যাচ্ছেন। তাঁর কলেজে ছাত্রী কমে যাওয়ার পেছনে এসবও কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, ভর্তির জন্য ছাত্রীদের আকৃষ্ট করার পরিবর্তে কিছু কিছু সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। ফলে ছাত্রীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। কলেজ প্রশাসন নিয়মিত কোর্সের প্রতি নজর না দিয়ে আর্থিক সুবিধার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করছে। এসব কোর্সের জন্য অনুষ্ঠানস্থল (ভেন্যু) ভাড়া, থাকার জন্য কক্ষ ভাড়াসহ বেশ কিছু খাতে আর্থিক সুবিধা পায় কলেজ প্রশাসন। এসব টাকার ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এ ছাড়া এসব প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পুরুষ প্রশিক্ষণার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ছাত্রীদেরই হোস্টেলের একটি ব্লকে।এ নিয়ে ছাত্রীরা তাঁদের কিছু অসুবিধা হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

দুজন ছাত্রী বললেন, একই খাবারের কক্ষে পুরুষ প্রশিক্ষণার্থীদের খাবারের ব্যবস্থা করায় কিছু অসুবিধা হয়, বিশেষ করে রাতের খাবারের সময়। আবার খাবারের দায়িত্বে থাকা লোকজন সন্ধ্যার দিকেই চলে যাওয়ায় খাবার নিয়ে অসুবিধা হয়। ফলে অনেক ছাত্রী খাবার নিজেদের কক্ষে নিয়ে যান।

কলেজে বর্তমানে ৩৮ জন শিক্ষক রয়েছেন। যা ছাত্রীদের তুলনায় বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বললেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও অবকাঠামোগত সুবিধা থাকার পরও সরকারি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পর্যাপ্ত ছাত্রী না পাওয়া অনেকটা ‘হাতি পোষার মতো’ অবস্থা হয়েছে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.01471996307373