বিএম কলেজের উন্নয়নকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

বিএম কলেজের উন্নয়নকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি |

বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে কারা কি কাজ করছে তার কিছুই জানে না বিএম কলেজ কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবারও কলেজ ছাত্রলীগ নেতারা এসে শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে এই নিম্নমানের কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেন এবং কাজ ঠিকভাবে না করলে বিল না দেওয়ারও দাবি করেন এই ছাত্রলীগ নেতারা।

ঐতিহ্যবাহী সরকারি বিএম কলেজে দীর্ঘ আন্দোলনের পর তিনটি ভবন এবং সড়কের কাজ শুরু হয়। তবে সেই কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা সময় অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে কলেজের মসজিদ গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এর প্রমাণও মিলে। যেখানে ১০ ইঞ্চি ব্যবধানে রড বাঁধার কথা সেখানে রড বাঁধা হয় ১৫ ইঞ্চির বেশি ব্যবধানে। পরে সেখানে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পুনরায় সেই রড খুলে ফেলা হয় এবং তড়িঘড়ি এক রাতের মধ্যে ঢালাই কাজ সম্পন্ন করেন ঠিকাদার।

অভিযোগ রয়েছে সড়ক নির্মাণকারী ঠিকাদার ও বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন এই কাজটি একা নয় তার পেছনে রয়েছে কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য আহসান উল্লাহ মিরাজ ওরফে বাবু। আর এই বাবুর প্রভাবেই কলেজে এই নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে বলে বিস্তর অভিযোগ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ নেতারাও। আহসান উল্লাহ মিরাজ ওরফে বাবু নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজের চুক্তিতে তার প্রভাবে বিএনপি নেতা জাহিদ শুধু সড়ক নয় এমনকি কলেজের ভবন নির্মাণের কাজও পেয়েছে বলে জানা গেছে। সড়ক নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত এক নির্মাণ শ্রমিক জানান, ঠিকাদার যেভাবে কাজ করতে বলেছে সেভাবে কাজ করছি। আমাদের তো কোনো বিষয় নেই এখানে। যেভাবে ঠিকাদার স্টিমেট দিচ্ছে সেভাবেই কাজ করছি।

এই বিষয়ে ঠিকাদার জাহিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। পাশাপাশি অভিযোগের প্রেক্ষিতে আহসান উল্লাহ মিরাজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বিএম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আতিকুল্লাহ মুনিম, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত ও মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহম্মেদ মান্না বলেন, বিএম কলেজে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি চলতে দেওয়া হবে না। আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর কলেজে নানা উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। আর এই উন্নয়ন কাজে দুর্নীতি মেনে নেওয়া হবে না। যারা জড়িত রয়েছে তারা যতই ক্ষমতাশালী হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং এই কাজ নতুন করে করার দাবি করেন এই ছাত্রলীগ নেতারা।

সরকারি বিএম কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলামিন সরোয়ার নিশ্চিত করেছেন যে বর্তমানে যে কাজগুলো বিএম কলেজে চলছে তার অধিকাংশ এই ঠিকাদারই করছেন। তবে এ বিষয়ে তাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি কোথায় কি কাজ হচ্ছে তা না জানিয়ে কাজ শেষে তাদেরকে বুঝে নিতে বলা হয়।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, কাজে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের কাজ আমরা দেখব, কাজ যদি ঠিকমতো না হয় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোয়ালিটির সঙ্গে কোনো আপোষ করা হবে না। এদিকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া বলেন, সমন্বয়হীনতার কারণে এমন সমস্যা হয়েছে। যদি আমরা কাজের সিডিউলটা পেতাম তাহলেও বুঝতে পারতাম কি ধরনের কাজ করতে বলা হয়েছে আর ঠিকাদার কি করছে।

এদিকে গত রবিবার সাংবাদিকরা নির্মাণ কাজে অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ঠিকাদার জাহিদ হোসাইনের ভাই জাকির হোসেন সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেন। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সটকে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কথা বললেও কাজ চালিয়ে যায় এই ঠিকাদার।

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071799755096436