ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ডান চোখের দৃষ্টি হারানো সেই বাংলাদেশি স্কুলছাত্র রাসেল মিয়া এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (জিপিএ-৩.১৭) হয়েছে। তার এ ফলাফলে খুশি পরিবার। রাসেল বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ শাখা থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
রাসেল মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানায়, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা নিয়ে অনেক কষ্টে পরীক্ষা দিয়েছি। বেশি সময় পড়ালেখা করলে মাথা ব্যথা করত। বন্ধুরা সবাই ভাল রেজাল্ট করেছে। আমি পারিনি বিএসএফের ওই গুলি লাগার কারণে। তারপরেও সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আগামীতে আমি আরও ভালো ফলাফল করতে পারি এবং শেষবারের মতো যেন ভারত সরকার আরেকবার ভারতে আমাকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দেয়।
রাসেলের বড় ভাই রুবেল মিয়া জানান, বিএসএফের ছোঁড়া রাবার বুলেটের আঘাতে গুরুতর আহত হয় ছোট ভাই রাসেল। প্রথমে ফুলবাড়ী হাসপাতাল ও পরে রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং সর্বশেষ দীর্ঘ এক মাস ঢাকা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় রাসেল মিয়া। রাসেলকে নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলে আইন ও শালিস কেন্দ্রের কর্মকর্তা আবু আহাম্মেদ ছাইজুল কবির ও হাসিবুর রহমান ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই-কমিশন গিয়ে আহত রাসেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য আবেদন করেন। আবেদন করায় রাসেলের ভারতের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবারকে আশ্বাস প্রদান করেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই-কমিশন। পরে ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই নিউ দিল্লীর অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে তার চিকিৎসা করা হয়।
রুবেল আরও জানান, প্রথম দফায় ভারতে নয় দিন ও দ্বিতীয় দফায় ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি দিল্লীর একই হাসপাতালে দুই দিন উন্নত চিকিৎসা নিয়ে এলেও তার দৃষ্টি ফেরেনি।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল বিকালে ফুলবাড়ী উপজেলার গোড়কমন্ডল সীমান্তে আন্তর্জাতিক মেইন সীমানা পিলার ৯৩০/৮ এর পাশে বাংলাদেশের ২০ গজ অভ্যন্তরে রাসেল বন্ধুদের সঙ্গে গরুর ঘাস কাটতে গেলে ৩৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্য তাদেরে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে অন্যরা অক্ষত থাকলেও স্কুলছাত্র রাসেলের মুখমন্ডলে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়।