ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে মামলা দায়েরকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রী সাংবাদিকদের সামনে এসে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এখনও আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং তাকেই নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ওই ছাত্রী।
তার ন্যায়বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক্ষেপ না নিলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ওই ছাত্রী বলেন, “আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। অনেকেই গণভবনে গিয়ে আপনাকে মা ডাকতে পারে। আবার তারাই নির্যাতিতাকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে সময়ক্ষেপণ করে হুমকিও দিতে পারে।
“সন্তান হিসাবে নয়, আমি আপনার রাষ্ট্রের একজন নির্যাতিতা সাধারণ ও অসহায় নাগরিক হিসাবে আপনার কাছে আমার ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছি। আর যদি নির্যাতিত হবার পর লাশ না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের কাছে মনে হয় যে ঘটনা সত্য না, তাহলে হয়ত আমার মৃত্যুই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাইয়ে দিবে।”
গত রবি ও মঙ্গলবার রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে নুরুল হক নুর ও তার ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করেন এই ছাত্রী।
প্রথম মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুনকে, যিনি এতদিন ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগকে।
এছাড়া নুরুল হক নুরসহ সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকিকে আসামি করা হয়।
ওই ছাত্রীর ভাষ্য, একই বিভাগে পড়া এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কাজে থাকার কারণে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। এর সুযোগ নিয়ে মামুন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি তার লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন। এ অভিযোগেই তিনি লালবাগ থানার মামলাটি দায়ের করেন।
আর কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারে বলা হয়, ধর্ষণের ওই ঘটনার পর ওই শিক্ষর্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে নাজমুল হাসান সোহাগ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। সুস্থ হওয়ার পর মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই তরুণী। তখন সোহাগ তাকে ‘সহযোগিতার আশ্বাস’ দেন এবং মামুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে সদরঘাট হয়ে ‘লঞ্চে করে চাঁদপুরে’ নিয়ে যান।
কিন্তু চাঁদপুরে মামুনকে না পেয়ে ওই ছাত্রীর সন্দেহ হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে লঞ্চে সোহাগ তাকে ‘ধর্ষণ করেন’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
এজাহারে বলা হয়, এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই তরুণী নুরের সঙ্গে দেখা করেন। নুর তাকে প্রথমে ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে ‘বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে অপপ্রচার চালিয়ে সম্মানহানী করার’ হুমকি দেন।
এরই মধ্যে মামলার বাকি তিন আসামি নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ‘কুৎসা’ রটাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।