বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে জটিলতা কত প্রকার ও কী কী - Dainikshiksha

বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে জটিলতা কত প্রকার ও কী কী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ভঙ্গুর হইয়া পড়ায় বৃক্ষতলে পাঠদান চলিতেছে—এইরূপ খবর আমরা প্রায়শই দেখিতে পাই সংবাদপত্রের পাতায়। কিন্তু একটি বড় শহরের বিদ্যালয়ের ক্লাস হইতেছে ক্লাবঘরের বারান্দায়—এই ধরনের সংবাদ খুব একটা দেখা যায় না। বগুড়া শহরের লতিফপুর কলোনিতে অবস্থিত প্রীতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হইল সেই বিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর অতিক্রান্ত হইবার পরও যাহার নিজস্ব কোনো ভবন নাই। নিজস্ব ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা আড়াই শত হইতে হ্রাস পাইয়া চার ভাগের একভাগ ৭২ জনে আসিয়া ঠেকিয়াছে। দুইশত বর্গফুটের একটি ক্লাব ঘর ও বারান্দায় শিক্ষাদানের কার্যক্রম পরিচালিত হইতেছে।

ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদন হইতে জানা যায়, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৩ সালে। ১৯৭৮ সালে ইহার সরকারিকরণ হয়। অবাঙালি বিহারিদের মালিকানাধীন একটি ভবন স্বাধীনতার পর পরিত্যক্ত হয় এবং সেই পরিত্যক্ত ভবনে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। সেই ভবনটিও ঝুঁকিপূর্ণ হইয়া উঠিলে ২০১৩ সালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে নূতন ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়। ২০১৪ সালে নূতন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়াছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পুরাতন ভবন ভাঙিয়া নিলামে বিক্রয়ের পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নূতন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু জমিটির মালিকানা দাবি করিয়া নূতন ভবন নির্মাণে বাধা দেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর বগুড়া কার্যালয়। ফলে নির্মাণ কাজ আর আগাইতে পারে নাই। সেই সময় বগুড়া জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠকের পর এই দফতরের সুপারিশ লইয়া জমিটি শিক্ষা বিভাগের নিকট হস্তান্তরের একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু আজ অবধি বিষয়টির সুরাহা হয় নাই। ফলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলিতেছে ক্লাবঘরে। ছয়জন শিক্ষক বসিবার জন্য এবং পাঁচটি শ্রেণির শিক্ষার্থীর ক্লাস করিবার জন্য ওই দুইশত বর্গফুটের একটিই কক্ষ রহিয়াছে। বারান্দায় ক্লাস লওয়া ছাড়া আর উপায় কী?

প্রতিষ্ঠার ৪৫ বত্সর পরও একটি বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন নাই, ইহা বড়ই আশ্চর্যের ! একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে উনবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতা বিরাজ করিতেছে যেন! একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গড়িয়া তুলিতে গিয়া একই সরকারের দুই অধিদফতরের বিবাদ হইয়া উঠিয়াছে প্রধান বাধা, ইহা কেমন কথা? নূতন ভবনের জন্য অর্থ বরাদ্দ হইয়াছে, কিন্তু গণপূর্ত অধিদফতর হাজির হইয়াছে জমির মালিকানার দাবি লইয়া। তাহা হইলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই মালিকানার বিষয়টি এতদিন স্থির করিবার উদ্যোগ নেয় নাই কেন? জেলা প্রশাসন মধ্যস্থতা করিয়াছে, কিন্তু জেলা ও উপজেলার শিক্ষা বিভাগ এতদিন কী দায়িত্ব পালন করিল? প্রতিটি বিদ্যালয়ের জমির মালিকানা কি তাহারা স্বাধীনতার এত বত্সর পরও নিশ্চিত করে নাই? কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমির মালিকানা সুনিশ্চিত করিবার কোনো নীতি গ্রহণ করিয়াছে কি? সকল বিভাগ যদি তাহাদের নিজ নিজ দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করিত, তাহা হইলে এই প্রশ্নগুলিই উঠিত না। এক্ষণে এই বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করিতে হইবে অবিলম্বে।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.024553060531616