ভোলার চরফ্যাশনে টাকা ছাড়া মিলছে না বিনা মূল্যের পাঠ্যবই। উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিনা মূল্যের বই পেতে শিশু শিক্ষার্থীদের ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা গুনতে হচ্ছে। ভর্তির ফি, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং ছবকের মিলাদ খরচের নামে বিনা মূল্যের সরকারি পাঠ্যপুস্তকের বিনিময়ে শিশুদের হাত থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত বুধবার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। রোববার (১২ ডিসেম্বর) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেছেন, উপজেলার ২১২টি বিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তকের বিনিময়ে টাকা আদায়ের হিড়িক চললেও উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। দরিদ্র পরিবারের শিশুদেরও পর্যায়ক্রমে টাকা দিয়ে বই নিতে হচ্ছে।
নতুন বছরের শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আশা করে থাকে তারা বিনা মূল্যের বই পাবে। আর শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের বই পৌঁছে দেয়ার সরকারের এ উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় হলেও গত কয়েক বছর ধরে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে; যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রতি বছরই এমন দুর্নীতির খবর পাওয়া গেলেও অপরাধী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয় না। বিষয়টি অবহেলিতই থেকে যায়। এ নিয়ে কারও কোনো মাথা ব্যথ্যা নেই। একশ্রেণীর অসাধু দুর্নীতিবাজ শিক্ষক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মিলাদ, ভর্তি ফি’র অজুহাত দেখিয়ে অর্থ আদায় করছে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে; আর নিজেদের পকেট ভারি করছে। তারপর বিনা মূল্যের বই দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শুধু যে ভোলার চরফ্যাশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেই এমন অনিয়ম দুর্নীতি হচ্ছে তা নয়। দেশের আরো অনেক স্থানে এমন অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পাওয়া গেছে। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মিলাদ, ভর্তি ফি- এসবের সঙ্গে বিনামূল্যের বই বিতরণের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও অসাধু শিক্ষকরা অর্থের বিনিময়ে বই বিতরণ করছে।
টাকার বিনিময়ে বিনা মূল্যের বই বিতরণের এ অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কঠোর হতে হবে। যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টাকার বিনিময়ে বিনা মূল্যের বই বিতরণ করছে, শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হচ্ছে তা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যের বই যেন বিনা মূল্যেই পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।