বিনামূল্যের বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা - Dainikshiksha

বিনামূল্যের বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

আকতারুজ্জামান |

আগামী বছরের প্রথম দিনে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২টি বই বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী অক্টোবরের মধ্যে এসব বই ছাপা শেষ করতে চেয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাক-প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বইয়ের ছাপা কাজে অগ্রগতি থাকলেও প্রাথমিকের প্রায় ১০ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কার্যাদেশই দিতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠান কাগজ সরবরাহে বিলম্ব করায় মাধ্যমিকের প্রায় ৫ কোটি পাঠ্যবই যথাসময়ে ছাপা হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটির বেশি বই যথা সময়ে পাওয়া সম্ভব হবে না— এমন মন্তব্য এনসিটিবি কর্মকর্তা, মুদ্রণশিল্প সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের। তবে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলছেন, অক্টোবরের মধ্যে আনুমানিক ৮০ শতাংশ বই ছাপা সম্ভব হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ কথা বলেন তিনি। আর মুদ্রণশিল্প সমিতির সভাপতি বলছেন, কোনোভাবেই প্রাথমিকের বই ছাপাকাজ ডিসেম্বরের আগে শেষ করা সম্ভব হবে না। এনসিটিবি সূত্র জানায়, ২০১৯ শিক্ষা বছরের জন্য প্রাক-প্রাথমিকে ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার ২০টি, প্রাথমিকে ৯ কোটি ৮৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৯টি, মাধ্যমিকে ২৪ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৭টি নতুন বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে বিতরণ করার কথা রয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৪টি বই। মাধ্যমিকের পাঠ্য বইয়ের ছাপাকাজ চললেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধ্যমিকের বইয়ের কভারের জন্য আর্ট কার্ড চীন থেকে এখনো এসে পৌঁছেনি। সরবরাহের কার্যাদেশ পাওয়া মাস্টারসিমেক্স গতকাল পর্যন্ত তা ডেলিভারি দেয়নি।

এ ছাড়া মাধ্যমিকের বইয়ের কাগজ সরবরাহের কার্যাদেশ পাওয়া আল নুর পেপার মিলস্ ৬শ মেট্রিক টন এখনো সরবরাহ করেনি। কাগজ সরবরাহ না হওয়ায় মাধ্যমিকের ৩৪০ লটের প্রায় পাঁচ কোটি যথা সময়ে ছাপা হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি নিম্নমানের কাগজ সরবরাহ করলে এনসিটিবি তা বাতিল করেছে। সূত্র জানায়, ৬০ জিএসএম আদর্শমাত্রার কাগজ সরবরাহের কথা থাকলেও কম জিএসএস ও কম ব্রাইটনেসের কাগজ সরবরাহ করায় সেসব কাগজ বাতিল করে দেয় এনসিটিবি। জানা গেছে, এসব কাগজ সরবরাহের পর ২৮ দিনের মধ্যে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করবে এনসিটিবি। এরপর পাঠ্যবই ছাপার কার্যাদেশ দেবে। কার্যাদেশ পাওয়ার ৮৪ দিনের মধ্যে পাঠ্যবই ছাপাকাজ শেষ করতে হবে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে। প্রাক-প্রাথমিক আর প্রাথমিক মিলে প্রায় ১১ কোটি নতুন বই ছাপার পরিকল্পনা সরকারের। কিন্তু সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ভেস্তে গেছে প্রাথমিক শ্রেণির আগাম বই পৌঁছানোর টার্গেট। এসব বই ছাপাকাজে এনসিটিবির দরপত্রে প্রাক্কলিত দর ছিল ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কিন্তু টেন্ডারে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে প্রাথমিকের বইয়ের ৩৫ শতাংশ বেশি দামে দরপত্র জমা দেয়। ফলে ১১১ কোটি টাকা দর বেড়ে যাওয়ায় পুনরায় টেন্ডারে যেতে বাধ্য হতে হয়েছে এনসিটিবিকে।

পুনঃটেন্ডারের পর এ সংক্রান্ত ফাইল বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে রয়েছে বলে জানা গেছে। মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এনসিটিবিতে যাবে এ সংক্রান্ত ফাইল। এরপর ‘নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ)’ পাওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তিপত্র করবে এনসিটিবি। এরপর পরবর্তী ৮৪ দিনের মধ্যে বইয়ের ছাপাকাজ শেষ করতে হবে। সে হিসেবে প্রাথমিকের বই যথা সময়ে ছাপা শেষ করতে সরকারকে অনেক বেগ পেতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনসিটিবি সদস্য বলেন, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে অক্টোবরের মধ্যে বই ছাপাকাজ শেষ করা অসম্ভব। বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত গতকাল বলেন, এখনো এনসিটিবির কাছে প্রাথমিকের বই ছাপার কার্যাদেশ পাইনি। আমরা তো আর তাগাদা দিয়ে কার্যাদেশ নিতে পারি না। শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দিতে হবে। সব মিলিয়ে ঈদের আগে তো কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের আগে এসব বই ছাপাকাজ শেষ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

 

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044560432434082