দুই পর্বে নয়, আগামী ১৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি এক পর্বে অনুষ্ঠিত হবে এবারের ইজতেমা। বিশ্ব ইজতেমা নয়, এবার থেকে নাম হবে জাতীয় ইজতেমা। বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সাথে বৈঠক শেষে একথা জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে ইজতেমার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। আর কোনো বিষয়ে সমঝোতা না হলে ধর্মমন্ত্রীর নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনে মাওলানা জুবায়ের আহমেদ ও দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভীর অনুসারী দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। তখন দুই পক্ষ একসঙ্গেই ইজতেমা আয়োজনে সম্মত হয়।
ইজতেমার তারিখ নির্ধারণের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠক বসেন নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা সাদ'এর অনুসারীর পক্ষে ওয়াসেফুল ইসলাম ও খান সাহাবুদ্দিন নাসিম এবং দেওবন্দপন্থীদের পক্ষে মাওলানা যুবায়ের ও উমর ফারুক। প্রধানমন্ত্রী সামরিক সচিব বৈঠকে অংশ নেন। তাবলিগ জামাতের এক পক্ষ ৮ ফেব্রুয়ারি এবং অপর পক্ষ ২২ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা শুরুর প্রস্তাব দেন। দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমা আয়োজনেরও আগ্রহ প্রকাশ করে। দুই ঘন্টার আলোচনায় অবশেষে এবারের ইজতেমা একসাথে করার সিদ্ধান্ত হয়। তাবলিগ জামাতের ফরেন কমিউনিকেশন রেজা আরিফ বৈঠক শেষে এসব কথা জানান।
বৈঠকে আরো সিদ্ধান্ত হয়, মাওলানা সাদ ইজতেমায় অংশ না নিলে অপর পক্ষের মাওলানা ইব্রহাহিম ও আহমেদ লাট অংশ নেবেন না। তবে দুই পক্ষের বিদেশি মেহমানই অংশ নিতে পারবেন। আর ধর্মমন্ত্রীর নেতৃত্বের কমিটির বাইরে অন্য কেউ তাবলিগ জামাত বা ইজতেমায় হস্তক্ষেপ করবেনা বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে ইজতেমায় কে দোয়া ও বয়ান করবেন, খিত্তার আমীর কিভাবে নির্ধারিত হবে বা দুই পর্বের বদলে এক পর্বের ইজতেমার স্থান সংকুলান কিভাবে হবে সে ব্যাপারে বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত হ নি। দুই পক্ষের দুই প্রতিনিধি ওয়াসেফুল ইসলাম ও মাওলানা যুবায়ের এসব বিষয়সহ ইজতেমা সফল করতে আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনী সিদ্ধান্ত নেবেন। সমঝোতা না হলে সরকার গঠিত কমিটি সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
এ বছর জানুয়ারিতে ইজতেমা অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও মাওলানা জুবায়ের ও দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারীদের বিরোধের মুখে গত বছরের ১৫ নভেম্বর ইজতেমা স্থগিতের ঘোষণা দেয় সরকার। গত ১ ডিসেম্বর তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে টঙ্গীতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। এই দুই পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধপূর্ণ অবস্থানের কারণে ইজতেমা আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।