বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ইউনিলিভারের বিশ্বসেরা টয়লেট ক্লিনিং ব্র্যান্ড ডমেক্স। প্রতিষ্ঠানটি দেশের স্কুলগুলোর নোংরা টয়লেট পরিস্থিতি পাল্টাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ডমেক্সের বক্তব্য উন্নয়নের রাজপথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের যে কয়েকটি দেশ অর্থনৈতিক নানা সূচকে প্রথমদিকের সারিতে অবস্থান করছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
খাদ্য-বস্ত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, রপ্তানি বা বৈদেশিক বাণিজ্যের অগ্রগতি, প্রবাসীদের আয় বৃদ্ধি, যোগাযোগ ও পরিবহনব্যবস্থার উন্নতি, শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এবং জিডিপির অবিরাম ঊর্ধ্ব হার সত্ত্বেও দেশের কিছু কিছু জরুরি বিষয় উদ্বেগজনক ও নিরাপত্তাহীন রয়ে গেছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার ব্যাপার হলো দেশের হাজার হাজার স্কুলের টয়লেটের দুরবস্থা।
দেশের তিন-চতুর্থাংশ স্কুলের টয়লেটই নোংরা : ন্যাশনাল হাইজিন ব্যাস লাইন সার্ভে এবং ইউনিসেফের তথ্য অনুসারে নোংরা থাকায় বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্কুলের টয়লেট ব্যবহারের অনুপযুক্ত। অথচ বছরের পর বছর এই অবস্থা সত্ত্বেও সবাই নিশ্চুপ। এ নিয়ে অভিভাবক, শিক্ষকসহ জনপ্রতিনিধি ও নীতিনির্ধারক মহল নির্বিকার।
কারণ আমাদের কাছে টয়লেট ব্যবহার বা টয়লেটের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কথা বলা মানে ‘নোংরা কথা’ বলা, যা সবার সামনে তুলে ধরা লজ্জার বিষয়। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার তুলনায় টয়লেটের সংখ্যা নগন্য। সঠিকভাবে টয়লেট ব্যবহার করতে না জানা, পর্যাপ্ত পানি, পানি ব্যবহারের পাত্র ও আলোর ব্যবস্থা বা দরজার লক না থাকা, পরিচ্ছন্ন কর্মীর গাফিলতি বা পরিচ্ছন্ন কর্মী না থাকা, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অসচেতনতা ইত্যাদি নানা কারণেই স্কুলের লাখ লাখ টয়লেট নোংরা এমনকি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে আছে।
স্কুলের দুই কোটি শিশু পরিচ্ছন্ন টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত: একটি গবেষণায় জানা যায় যে নোংরা টয়লেটের কারণে আমাদের দুই কোটি শিশু টাইফয়েড, জন্ডিস, কলেরা বা ডায়রিয়ার মতো মারাত্মক রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। স্কুলের ছেলে শিশুরা নোংরা সত্ত্বেও কোনোমতে টয়লেট ব্যবহার করে।
কিন্তু মেয়েদের পক্ষে বেশি নোংরা টয়লেট ব্যবহারের উপায় থাকে না। নোংরা টয়লেট ব্যবহার এড়াতে তারা এমনকি সারা দিন পানিও কম পান করে। টয়লেট চেপে রাখার ফলে তাই তারা মাঝেমধ্যেই ইউটিআই বা ইউরিন ইনফেকশনে ভোগার আশঙ্কায় থাকে।
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ : ‘এসডিজি সিক্স’কে তুলে ধরতে স্কুলগুলোর টয়লেটের নোংরা অবস্থা বদলানোর নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ওয়াটার এইডসহ বেশ কিছু এনজিও ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে বহুমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
ডমেক্স ‘নো মোর নোংরা টয়লেট’: ডমেক্স মনে করে স্কুলের টয়লেটের নোংরা দূর করতে শুধু স্কুল বা শিক্ষকরা নন, সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাই ইউনিলিভারের বিশ্বসেরা টয়লেট ক্লিনিং ব্র্যান্ড ডমেক্স নোংরা টয়লেট নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ডমেক্স ‘নো মোর নোংরা টয়লেট’ অভিযানে যোগ দিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে।
ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান সাড়া দিয়ে শপথ নিয়েছে ডমেক্সের আহ্বানে। এই অভিজানে ডমেক্সের সঙ্গে আছে ওয়াটার এইড, ইয়ুথ ফর এসডিজি সিক্স, জাগো এবং ভলানটিয়ার ফর বাংলাদেশ।
বিশ্ব টয়লেট দিবস উদ্যাপন : ‘বিশ্ব টয়লেট দিবস’ উদ্যাপন উপলক্ষে নানা উদ্যোগের পাশাপাশি ডমেক্স গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার মহা প্রস্তুতি নিয়েছে। ‘বিশ্ব টয়লেট দিবস’-এর স্লোগানকে সামনে রেখে ডমেক্স বিশ্বাস করে, প্রতিটি শিশুরই আছে পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ টয়লেটের অধিকার; একটি শিশুও যেন বাদ না পড়ে পরিচ্ছন্ন টয়লেটের সুবিধা থেকে।
এ জন্য ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তৈরিতে ব্যবহৃত পণ্য বিনা মূল্যে প্রদানের মাধ্যমে ডমেক্স এক বছরের জন্য নিশ্চিত করবে দেশের শত শত স্কুলের টয়লেটের পরিচ্ছন্নতা।