করোনাভাইরাসের প্রভাবে বৈশ্বিক শ্রমবাজারে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে; পুরোপুরি কিংবা আংশিক লকডাউনের কারণে বিশ্ব শ্রমশক্তির ৮১ শতাংশই এখন কাজহীন বা বেকার। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজন শ্রমিকের মধ্যে চারজনের বেশি কাজহীন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত ও দ্রুত কার্যকর নীতি ও পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। সংস্থার তথ্য, বিশ্বব্যাপী ৩৩০ কোটি মানুষ শ্রমবাজারে যুক্ত।
‘আইএলও মনিটর সেকেন্ড এডিশন : কভিড-১৯ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক’ নামের প্রতিবেদনটিতে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক নাগাদ দৈনিক কর্মঘণ্টার ৬ দশমিক ৭ ঘণ্টা কেড়ে নেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এটি প্রায় দুই কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজের সমান। তুলনামূলক আরব দেশগুলোয় এ সমস্যা প্রকট বলে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে। আরব অঞ্চলে ৮.১ শতাংশ অর্থাৎ এ অঞ্চলের দেশগুলোর ৫০ লাখ পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজ নষ্ট করবে। ইউরোপে ৭ শতাংশ হারে ১০ কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজ কেড়ে নিচ্ছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি। এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৭.২ শতাংশ হারে সাড়ে ১২ কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজের সমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব অঞ্চলের শ্রমবাজারই করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সমস্যাটা প্রকট আকার নেবে। এই ক্ষতি ২০০৮-৯ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাকেও ছাড়িয়ে যাবে। কোনো কোনো খাতের শ্রমবাজার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে প্রতিবেদনে সে অনুমানও করা হয়েছে। এতে আবাসন, শিল্প উৎপাদন, খাদ্যসেবা, খুচরা ব্যবসা ও ব্যবসা প্রশাসন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে শেষ পর্যন্ত এ বছর বৈশ্বিক বেকারের সংখ্যা কী পরিমাণে গিয়ে ঠেকে তা নির্ভর করছে টেকসই উন্নয়নে নীতি পদক্ষেপের ওপর। বছরের শেষদিকে বেকারত্বের হারটা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। আইএলওর প্রথম দিকের অনুমানকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। প্রাথমিক অনুমানে আড়াই কোটি বেকারত্বের কথা জানিয়েছিল আইএলও। আইএলওর ডিরেক্টর জেনারেল গাই রাইডার বলেন, ‘উদ্যোক্তা এবং শ্রমিকরা মহা-অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। আমাদের দ্রুত এবং একসঙ্গে অভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।