ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু থাকবে কি না- সে বিষয়ে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আরও পাঁচ সপ্তাহ সময় নেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, অধিকাংশ শিক্ষক সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু রাখার পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয়। সভায় সান্ধ্যকালীন কোর্সের পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। একই সভা থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক সংবাদ প্রত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করা ও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি সান্ধ্যকালীন কোর্সের কঠোর সমালোচনা করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সেই নির্দেশ মোতাবেক সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধও করে দেয়। কিন্তু যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সান্ধ্যকালীন কোর্সের সমালোচনা করেছেন সেখানেই এটা বন্ধ হয়নি। এ নিয়ে হই-হট্টগোলে মেতেছেন একশ্রেণীর শিক্ষক। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, সান্ধ্যকালীন কোর্সের পক্ষেই বেশিরভাগ শিক্ষক অবস্থান নিয়েছেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে কোর্সের পক্ষে নন, নিয়মিত শিক্ষার্থীরা যে কোর্সের পক্ষে নন; সেই কোর্সের পক্ষ নিয়েছেন এই শ্রেণীর শিক্ষক। নিয়মিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেছেন, শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকরা সময় দেন না। তবে সন্ধ্যাবেলার পড়ালেখায় তারা ঠিকই সময় দেন। কারণ সেখানে সময় দিলে তাদের বাড়তি আয় হয়।
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করলে নৈতিক কারণেই সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু রাখা সঙ্গত নয়। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে নগদ নারায়ণের কাছে একশ্রেণীর শিক্ষকের নৈতিকতা পরাস্ত হয়েছে। স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ নিয়ে তারা সান্ধ্যকালীন কোর্সের পক্ষে জোর অবস্থান নিয়েছেন। আবার সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বায়ত্তশাসনের সুযোগে। আমরা জানতে চাইব, স্বায়ত্তশাসন মানে কি নিজেদের খেয়ালখুশিমতো চলা। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা ও সান্ধ্যকালীন কোর্স প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় যে অবস্থান নিয়েছে তাতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশ পুনর্বিবেচনা করে দেখা জরুরি কিনা।