রাজশাহী নগরীর খড়খড়ি এলাকায় নিজস্ব ভবন নির্মাণ করছে বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব সম্পত্তির পাশাপাশি জোর করে দখল করা সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গাও কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় আয়নাল হক জানান, পৈতৃক সূত্রে রাজশাহী নগরীর খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় তাঁর প্রায় পাঁচ কাঠা জমি রয়েছে। এ জমির পাশে তাঁর অন্য চার ভাইয়েরও জমি ছিল। কিন্তু ২০১০ সালে ওই চার ভাই সম্পত্তিগুলো বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করে। আয়নাল পৈতৃক সম্বলটুকু হারাতে চাননি বলে বিক্রি করেননি।
তাঁর অভিযোগ, বিক্রি না করলেও তাঁর জমিটি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাস দুয়েক আগে জোর করে দখলে নেয়। এরপর গত ৩০ নভেম্বর ওই জমিতে থাকা পাঁচটি বিশালাকার আমগাছ ও একটি খেজুরগাছ কেটে নেয়। বাধা দিতে গেলে তারা নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে আয়নাল ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে। এ ছাড়া জমিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করার জন্যও চাপ দিতে থাকে।
আয়নাল বলেন, ‘আমার জমি বাজারদর অনুযায়ী অন্তত ১৫ লাখ টাকা কাঠা। কিন্তু বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাত্র ছয় লাখ টাকা কাঠা হিসেবে দিতে চাচ্ছে। আমি এ দামে জমি বিক্রি করে অন্য কোথাও একই পরিমাণ জমি কিনতে পারব না। ছেলে-মেয়ের জন্য ভিটার প্রয়োজনে আমার জমি দরকার আছে। তাই আমি জমি হারালে আর জমি কিনতে পারব না।’
স্থানীয়রা জানায়, আয়নালের তিন মেয়ে ও এক ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করে কোনোমতে জীবন যাপন করেন। এ অবস্থায় প্রভাবশালী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। জমি দখল ও গাছ কাটার অপরাধে তিনি স্থানীয় চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও ধরনা দিয়েছেন; কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
স্থানীয় হোসেন আলী অভিযোগ করেন, ‘আরো কয়েকজনের জমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একই কায়দায় দখল করে নিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন দালাল ও প্রভাবশালী কর্তৃপক্ষের ভয়ে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না।’
এ নিয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানার পরিদর্শক হুমায়ন কবির বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু জমি নিয়ে কিছু করার নেই। তারা আদালতে মামলা করতে পারে।’
জানতে চাইলে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহসান পারভেজ বলেন, ‘আমরা কারো জমি দখল করছি না।’
বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মহিউদ্দিন বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি দেখছি না। প্রকল্প পরিচালক দেখছেন, তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’