কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ এনে এক শিক্ষকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে এক ছাত্রী ছয় দিন ধরে অবস্থান করছেন। উপজেলার চরতেরটেকিয়া গ্রামে গত ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে বিষের বোতল হাতে ওই শিক্ষকের ঘরে ঢুকে অবস্থান করছেন তিনি। বিয়ের দাবি বাস্তবায়ন না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও জানিয়েছেন ওই ছাত্রী। বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেও তাকে বুঝাতে পারেননি।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম এমএ কাইয়ূম। তিনি উপজেলার চরতেরটেকিয়া গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে। চরতেরটেকিয়া মৌজা বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীটি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ওই বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকার সময় শিক্ষক কাইয়ূমের কাছে প্রাইভেট পড়তো। ধীরে ধীরে ওই ছাত্রীটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন কাইয়ূম। এক পর্যায়ে বিয়ের কথা বলে ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও তৈরি করেন তিনি।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পাস করেন ছাত্রীটি। বর্তমানে তিনি একটি কলেজে ডিগ্রি ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে উপজেলার একটি গ্রামে ওই ছাত্রীটিকে বিয়ে দেয় তার পরিবার। এরপরও থেমে নেই ওই শিক্ষক।মোবাইল ফোনে ছাত্রীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ চালিয়ে যান।
জানা গেছে কাইয়ুম বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোন ওই ছাত্রীর স্বামীকে ভয়ভীতিও দেখিয়েছেন। আবারো বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আ্সতেও বলে। ছাত্রীটি কয়েকদিন আগে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। এই সুযোগে ছাত্রীটিকে বিভিন্ন কথা বলে ওই শিক্ষক তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ছাত্রীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করেন ।
পরের দিন গত ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রীটি কাজীর মাধ্যমে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান কাইয়ূম। ওই ছাত্রী বিষয়টি মোবাইলে তার বাবাকে জানায়। পরে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কাইয়ূমের বাড়িতে উপস্থিত হন ছাত্রীর বাবা। সবাই বিয়ের জন্য চাপ দিলেও তাতে রাজি হননি কাইয়ূম।
পরে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) পাকুন্দিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তার বাবা। ওই ছাত্রীর বাবা আহাদ মিয়া জানান,'মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিলেও তাকে সুখে থাকতে দেয়নি কাইয়ূম। ফুসলিয়ে একটি সংসার ভেঙে মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে মেয়েকে বাড়িতে রেখেই সে পালিয়ে যায়। আমি এর বিচার চাই।'
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাইয়ূমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পাকুন্দিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মফিজুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।