বরগুনার আমতলীতে বেগম নুরজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃষ্টি এলেই বাজে ছুটির ঘন্টা। বছরের পর বছর এ অবস্থায় বিদ্যালয়ে পাঠদান চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা নাসরিত সুলতানা।
জানা গেছে, আমতলী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের খোন্তাকাটা এলাকায় ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে বেগম নূর জাহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ওই সময় থেকে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় একটি টিন শেড ঘর তুলে চালছিল পাঠদান। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের বন্যায় স্কুল ভবনটি ভেঙে যায়। ওই সময় আবার স্থানীয় লোকের সহযোগীয়তায় পুনরায় টিনের ছাপড়া ঘর নির্মাণ করা হয়। ওই ছাপড়া ঘরেই গত তিন বছর ধরে পাঠদান চলছে। ছাপড়া ঘরটিও বর্তমানে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বৃষ্টি এলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় স্কুলে। টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে শ্রেণি কক্ষ তলিয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে স্কুল ছুটি দিতে হয়। এতে ব্যহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান। এছাড়াও ওই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে কোন রাস্তা নেই। হাটু সমান পানি-কাদা মাড়িয়ে স্কুলে ঢুকতে হয়। বিদ্যালয়ের দুরাবস্থার কথা আমতলী প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষকে জানালেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ভিতরে পানিতে থই থই করছে। ভবনটির চারপাশে পানি। চেয়ার টেবিলগুলো পানির মধ্যেই রাখা। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের কোন পরিবেশ নেই।
স্কুলের শিক্ষার্থী নসরাত, জিহাদ, জিদনি, বাতাসি ও আসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বৃষ্টি এলেই বিদ্যালয়ের টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষ তলিয়ে যায়। বিদ্যালয়ের ঢোকার রাস্তা নেই। হাটু সমান পানি ডিঙ্গিয়ে বিদ্যালয়ে ঢুকতে হয়। দ্রুত ভবন নির্মাণসহ বিদ্যালয়ের সব সমস্যা সমাধানের দাবী জানাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত তিন বছর ধরে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই ছাপড়া ঘরে পাঠদান করাতে হচ্ছে। বৃষ্টি এলেই পানিতে বিদ্যালয়ের চারপাশ ও শ্রেণিকক্ষ তলিয়ে যায়। ক্লাস করানোর মত কোন পরিবেশ থাকে না। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি কিন্তু তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। দ্রুত স্কুল ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন।
আমতলীর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ একান্তই প্রয়োজন। স্কুলটিকে পাঠদানের উপযোগী করার লক্ষে বরাদ্দ চেয়ে অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।